২০ ঘণ্টার লড়াইয়ে আক্রমণকারী শেষ জঙ্গিকে হত্যার পর কাবুল হামলার অবসান হয়েছে বলে জানিয়েছে আফগান কর্তৃপক্ষ। কাবুলে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস, ন্যাটো সদরদপ্তর ও পুলিশ ভবনে হামলা চালায় জঙ্গিরা। এতে ৯ জঙ্গি, ৪ পুলিশ এবং ৩ বেসামরিক মানুষসহ ১৬ জন নিহত হয়েছে। হামলার সময় জঙ্গিরা একটি নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে অবস্থান নিয়েছিলো। ওই ভবনটিও মুক্ত করা হয়েছে বলে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। কাবুলে সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এ হামলার ঘটনাটি এমন সময় ঘটলো যখন আফগান বাহিনীর হাতে নিরাপত্তার দায়িত্ব দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য বিদেশি বাহিনীগুলোকে পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার করে নেয়া শুরু হয়েছে। ন্যাটো ও যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানিয়েছে, হামলায় তাদের কোনো কর্মী আঘাত পায়নি। তালেবান এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। হামলার জন্য আফগান কর্মকর্তারা হাক্কানি নেটওয়ার্ককে দায়ী করেছে। বিদ্রোহী জঙ্গি গোষ্ঠী হাক্কানি নেটওয়ার্কের সাথে তালেবান ও আল-কায়েদার সম্পৃক্ততা থাকলেও তারা স্বতস্ত্রভাবে পরিচালিত হয়। গত মঙ্গলবার আফগানিস্তানে স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টার দিকে হামলাটি শুরু হয়। জঙ্গিবোঝাই একটি গাড়ি যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ১ কিলোমিটার দূরে আব্দুল হক স্কয়ারে একটি তল্লাশি চৌকির কাছে এসে থামে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, তল্লাশি চৌকির কাছে কয়েকটি শক্তিশালী বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বিদ্রোহীরা নিকটবর্তী নির্মাণাধীন একটি ৯ তলা ভবনে ঢুকে পড়ে। ওই ভবন থেকে, ৫ কিংবা তারও বেশি জঙ্গি যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস প্রাঙ্গণ লক্ষ্য করে মেশিনগানের গুলি, রকেট চালিত গ্রেনেড ও মর্টার হামলা চালায়। হামলাকারী জঙ্গিরা প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অভিযানে নামে। দখলকৃত ভবনটিতে অস্ত্রশস্ত্র জড়ো করতে তাদের কমপক্ষে ৩ দিন লেগেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। তারা টানা প্রায় ২০ ঘণ্টা ধরে হামলা চালানোর পর আফগান বাহিনী শেষ আত্মঘাতী হামলাকারীকে হত্যার মাধ্যমে ঘটনার ইতি টানে। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযানে মার্কিন হেলিকপ্টার ও আফগান বাহিনীর এমআই-৩৫ হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়। বিবিসির কাবুল প্রতিনিধি জানান, বিদ্রোহী জঙ্গিরা দীর্ঘ সময় লড়াই করার প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলো। এ হামলা চলার সময় কাবুলের পশ্চিমাংশে একটি থানার সামনে দু আত্মঘাতী হামলাকারী বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। কাবুল বিমানবন্দরে অপর এক আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ ঘটানোর সময় তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এছাড়া গোয়েন্দা বাহিনী পরিচালিত একটি কারাগারেও হামলার চেষ্টা করা হয়।
হারুন মির নামের এক আফগান কর্মকর্তা জানান, এই প্রথম জঙ্গিদের ৪টি দল আলাদা ৪টি জায়গায় একযোগে হামলা চালালো। এসব হামলার নিন্দা জানিয়েছেন আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই।