ঈদকে সামনে রেখে দেশীয় কাপড়ের অন্যতম বড় পাইকারি বাজার বাবুরহাট এখন জমজমাট। দেশের ৬৪টি জেলা থেকে কাপড় কিনতে ব্যবসায়ীরা এই বাজার ভিড় জমাচ্ছেন। বাবুরহাটে প্রতি সপ্তাহে এক থেকে দুই হাজার কোটি টাকার কাপড় বেচাকেনা হচ্ছে। এই বাজারে ছোট-বড় প্রায় ছয় হাজার ব্যবসায়ী স্থানীয়ভাবে উত্পাদিত কাপড়ের পাইকারি ব্যবসা করছেন। বাবুরহাট দেশের অভ্যন্তরীণ পোশাকের সিংহভাগ চাহিদা মেটাচ্ছে বলে দাবি এ বাজারের ব্যবসায়ীদের।
বাবুরহাট পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে স্থানীয়ভাবে উত্পাদিত পাইকারি কাপড়ের বিশাল বাজার এই বাবুরহাটে সরবরাহ হচ্ছে মহিলাদের শাড়ি, থ্রি-পিস, ওড়না, ছাপা কাপড়, থান কাপড়, পপলিন, বয়েল, সুতি শাড়ি, জামদানিসহ বিভিন্ন রং-বেরংয়ের দেশীয় আরামদায়ক কাপড়। এছাড়া পুরুষদের জন্য রয়েছে শার্ট, প্যান্ট, লুঙ্গি, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, গামছা, তোয়ালে ইত্যাদি। তবে ঈদে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে থ্রি পিস, লুঙ্গি ও ছাপা শাড়ির।
জানা যায়, বছরে দুটি ঈদ ও দুর্গা পূজার সময় বাবুরহাটের বেচাকেনা প্রায় দ্বিগুণ হয়। এক সময় বাবুরহাট শুধু শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা ও চাদরের জন্য বিখ্যাত ছিল। কিন্তু বর্তমানে রুমাল থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকার জামদানি শাড়ি পর্যন্ত বিক্রি হয় এই হাটে। আর বাবুরহাটের কাপড় এখন দেশের সব হাট-বাজারেই পাওয়া যায়। সপ্তাহে এই হাটে গড়ে এক থেকে দুই হাজার কোটি টাকার কাপড়-চোপড় বেচাকেনা হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বিশেষ করে সিলেট, চট্টগ্রাম, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, রাজশাহী, বগুড়া, দিনাজপুর, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কক্সবাজার, বান্দরবান, কুমিল্লা, লাকসাম ইত্যাদিসহ রাজধানী ঢাকা থেকে সপ্তাহে কয়েক হাজার পাইকারি ক্রেতা বাবুরহাটে আসেন। এখান থেকে তারা কোটি কোটি টাকার কাপড় কিনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার হাট-বাজারে নিয়ে যান।
জানা যায়, সারা সপ্তাহ জুড়ে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ট্রাকসহ ছোট-বড় ভ্যানে বোঝাই করে কাপড় সরবরাহ শুরু হয় বাবুরহাটে। আর শুক্র, শনি ও রোববার-এই তিন দিন হাটবারে শত শত ট্রাক বোঝাই কাপড় বাবুরহাট থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে রফতানি করা হয়ে থাকে। এদিকে ঈদের এখনও ১৫ দিন বাকি। এরই মধ্যে বাবুরহাট বাজারে ব্যাপক কাপড়ের সরবরাহ শুরু হয়েছে। পাইকারি ক্রেতারা দলে দলে বাজারে এসে শত শত ট্রাকভর্তি করে কাপড়-চোপড় দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া দূরদূরান্ত থেকে আসা একশ্রেণীর মহিলা ব্যবসায়ীও খুচরা কাপড় কিনে নিজ নিজ এলাকায় নিয়ে বিক্রি করে থাকেন।