বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট এবং চোরের দল। বিশ্বের দাতা দেশগুলো চুরির দায়ে অভিযুক্ত করে বলেছে, সরকারকে নয়, তারা দেশের মানুষকে ঋণ দেবে। ফ্যাসিস্ট এবং মহাচোরের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে দিনাজপুরসহ সারা দেশের মানুষের কাছে তিনি আহ্বান জানান। 
দিনাজপুর শহরের গোর-ই শহীদ ময়দানে ১৮ দলীয় জোটের জনসভায় খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে জনমত গঠনের লক্ষ্যে এ জনসভার আয়োজন করা হয়।
বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, ‘বর্তমান সরকার ফখরুদ্দীন এবং মইনউদ্দিনের দয়ার সরকার। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডিজিটাল দুর্নীতির দেশ গড়েছেন। দেশের প্রতিটি পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিন্তু চাকরি না দিয়ে যারা আওয়ামী লীগ করে না এবং যারা বিরোধী দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত, এ ধরনের পরিবারের সদস্যদের চাকরি থেকে ছাঁটাই করেছে সরকার।’
খালেদা জিয়া বলেন, বর্তমান সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীর অধীনে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, ‘১৯৯৬ সালে স্যার নিনিয়ানের দূতিয়ালির মাধ্যমে এ ধরনের সরকারব্যবস্থা আপনারা অগ্রাহ্য করেছিলেন। এখন একই ধরনের সরকার গঠন করে আপনারা নির্বাচন করতে চাইছেন। তখন আপনারা ওই সরকার মানেননি, এখন আমারও মানব না।’
খালেদা জিয়া বলেন, সরকার বিনা মূল্যে কৃষকদের সার দিতে চেয়ে বিএনপির আমলের ৩০০ টাকা বস্তার সার এখন ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করছে। কৃষকদের কাছ থেকে ধান না কিনে দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে ধান কিনছে। বর্তমান সরকারের আমলে এক লাখ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। বিদেশ থেকে চাকরি হারিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ দেশে ফেরত আসছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
জেলা বিএনপির সভাপতি মো. লুত্ফর রহমানের সভাপতিত্বে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুুবুর রহমান, জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ, এলডিপির সভাপতি অলি আহমদ, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, খেলাফত মজলিসের আমির মওলানা মো. ইসহাক প্রমুখ সভায় বক্তব্য দেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন গতকাল শনিবার বিকেল চারটায় ঢাকা থেকে সড়কপথে রওনা হয়ে বগুড়া সার্কিট হাউসে রাতযাপন করেন। খালেদা জিয়া বগুড়া ত্যাগ করার আগে সেখানকার সার্কিট হাউসে জেলা বিএনপির ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘বগুড়ার বিএনপি এখন অনেক শক্তিশালী। সারা দেশের মানুষ বিএনপির ওয়েবসাইটটি দেখতে পারবে।’ তিনি সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সবাইকে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেন।
সেখান থেকে আজ দুপুর ১২টার দিকে খালেদা জিয়া দিনাজপুরে রওনা হন। বেলা সোয়া তিনটার দিকে তিনি দিনাজপুরে এসে পৌঁছান। এরপর তিনি শহরের ফরিদপুর কবরস্থানে বাবা এস্কান্দর মজুমদার, মা বেগম তৈয়বা মজুমদার ও বড় বোন বেগম খুরশীদ জাহান হকের কবর জিয়ারত করেন। সেখান থেকে সার্কিট হাউসে ফিরে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে তিনি শহরের গোর-ই শহীদ ময়দানে ১৮ দলীয় জোট আয়োজিত জনসভাস্থলে আসেন। 
বিরোধী দলের ঘোষিত দ্বিতীয় পর্বের কর্মসূচি এই জনসভার মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়ার দেশব্যাপী সফর শুরু হলো।