আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ঐতিহাসিক পল্টন ময়দান থেকেই সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করবে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ওইদিন ধারাবাহিক কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। টানা তিন মাসের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে অবস্থান কর্মসূচি, ৭ বিভাগে রোডমার্চ ও ১৯ জেলায় মহাসমাবেশ।
দলীয় সূত্র জানায়, আগামী ডিসেম্বর মাসকে চূড়ান্ত বিজয়ের টার্গেট করেই বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি কর্মসূচি প্রণয়ন করেছে। দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এসব কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে এসব কর্মসূচি শুরু হতে পারে। ইতিমধ্যে পল্টন ময়দানে ওই জনসভা করতে চেয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
সূত্র মতে, বিএনপির ধারাবাহিক এসব কর্মসূচিতে সরকার বাধা দিলে হরতাল ও অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি দেয়ারও নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে দলটির। আপাতত ২৭ সেপ্টেম্বরের মহাসমাবেশ সফল করা এবং সেখান থেকে ঘোষিত ৭ বিভাগে রোডমার্চ ও ১৯ জেলার মহাসমাবেশ সফল করতে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলোর সঙ্গে চারদল ও সমমনা দলগুলোর নেতারা আগাম প্রস্তুতি শুরু করেছেন। এসব কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে গতকাল শনিবার সকালে বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের এক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এছাড়া গতকাল শনিবার পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিশেষ যৌথসভা করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ঢাকার কাছাকাছি  জেলা থেকেও মহাসমাবেশে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি এবং ঘোষিত কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ওই সভা থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে দলীয় সূত্র জানায়।
দলীয় সূত্র জানায়, সরকার পতনের আন্দোলনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন, সরকারের পদত্যাগ ও মধ্যবর্তী নির্বাচনে সরকারকে বাধ্য করা_ এই তিন ইস্যুকে প্রধান হিসেবে বিবেচনায় নিয়েছে বিএনপি। পাশাপাশি দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও রাস্তাঘাটের দুরবস্থার কারণে মানুষের যে দুর্ভোগ হচ্ছে তা কাজে লাগাতে সে ইস্যুগুলো নিয়েও বিভিন্ন কর্মসূচি থাকবে দলটির। এছাড়াও খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা, তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর বিরুদ্ধে প্রেফতারি পরোয়ানা জারি, নতুন নতুন মামলায় জড়ানো, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংকটে জনজীবনে নাভিশ্বাস, সরকারি জুলুম, নির্যাতন-হয়রানি, মামলা-হামলা, অপহরণ, গুম, খুন, নিয়োগ-বাণিজ্য, দেশবিরোধী চুক্তি, বিচার বিভাগ ও প্রশাসনে দলীয়করণ, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারিসহ বিভিন্ন দাবি আন্দোলনের মূল ইস্যুর সঙ্গে যোগ হবে। ধারাবাহিকভাবে আগামী ৩ মাসের মধ্যে এসব কর্মসূচি পালিত হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর পল্টন ময়দান থেকে সরকার পতনের আন্দোলনের ডাক দেবেন। এ লক্ষ্যে তিনি আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। দেশের এই দুঃসময়ে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে এমন আন্দোলন-সংগাম গড়ে তুলতে হবে  যে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।