কক্সবাজারের রামুতেবৌদ্ধ বসতি ও বিহারে হামলাও ভাঙচুরের পেছনে সরকারের ইন্ধন রয়েছে বলে বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি কূটনীতিকদের জানালো ওই ঘটনার তদন্তকারী বিএনপির টিম। রাজধানীর গুলশানস্থ হোটেলহেরিটেজে মঙ্গলবার বিকেল পৌনে পাঁচটা থেকে শুরু করেসন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা পর্যন্তঅনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে বিদেশি কূটনীতিকদের এ কথা জানানো হয়। এ সময় বিদেশি কূটনীতিকদের হাতে তদন্ত রিপোর্ট ও ভিডিওর কপি তুলে দেন বিএনপি নেতারা। বৈঠক শেষে বিএনপির তদন্ত দলের নেতা স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, “রামুতে হামলারপেছনে সরকারের ইন্ধন আছে বলে বিদেশি কূটনীতিকদের জানিয়েছি। কেননা দীর্ঘ সময় ধরে হামলা-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ চলেছে। কিন্তুতা বন্ধের চেষ্টা না করায় সরকারের ইন্ধন থাকার ব্যাপারটি বেশ বোঝা যায়।” তিনি বলেন, “রামুতে আমরা যা দেখেছি ও সাধারণ মানুষের বক্তব্যে যা বেরিয়ে এসেছে তাই তুলে ধরাহয়েছে।” মওদুদ বলেন, “আমরা নিরপেক্ষভাবে যে তদন্ত করে প্রতিবেদন তৈরি করেছি সেই রিপোর্টটি বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।” বিদেশিদের পক্ষ থেকে কি বলা হয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে মওদুদ বলেন, “কূটনৈতিকরা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। এতো দীর্ঘ সময় ধরে ঘটনা ঘটলেও সরকার কেন নিষ্ক্রিয় ছিল সে প্রশ্ন সবারই।” রুদ্ধদ্বার এ বৈঠকে ঢাকায় অবস্থানরত প্রায় সব দেশেরপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন বলেও জানান মওদুদ। দেশের ঘটনা বিদেশিদের কাছে বর্ণনা করা ক্ষতিকর হচ্ছে কি না জানতে চাইলে মওদুদ বলেন, “আমাদের দায়িত্ববোধ থেকেই আমরা এই প্রতিবেদন তাদের দিয়েছি। যাতে সঠিক চিত্রটি তারা জানতে পারেন। এতে দেশের কোনো ক্ষতি নয়, বরং উপকার হবে। ভাবমুর্তি উজ্জ্বল হবে। আর ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে আমরা তাও চাই।” তিনি বলেন, “বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু আওয়ামী লীগের সময়ে ঘটেছে। তাদের সময়ে পোপালগঞ্জে গির্জায় বোমা হামলা হয়েছে।” মওদুদ আহমদ আরো বলেন, “পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমেপ্রজেক্টরে কূটনৈতিকদের রামুর ঘটনার চিত্র দেখানো হয়েছে।” বৈঠকে বিদেশি কূটনীতিকদেরমধ্যে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, তুরস্ক, নরওয়ে ও ভ্যাটিক্যান সিটির রাষ্ট্রদূত এবং যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, নেদারল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, স্পেন, জাপান, মরক্কো, সুইজারল্যান্ড ইত্যাদি দেশের ইত্যাদি দেশের উচ্চ পর্যায়ের কূটনীতিকরা অংশ নেন। ছিলেন ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন প্রতিনিধিও। অপরদিকে বিএনপির পক্ষে ছিলেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাউদ্দিনআহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খন্দকার, হিন্দু বৌদ্ধ খৃস্টান ঐক্যফ্রন্টের আহবায়ক অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী, বিশ্ব বৌদ্ধ ফেডারেশনের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সভাপতি ঢাবিরঅধ্যাপক ড. সুকমোল বড়ুয়া প্রমুখ।