চির বৈরী দুটি দেশের দুই তারকার পরস্পরকে ভালো লাগা। সেই ভালো লাগা থেকে প্রেম, প্রেমিকের আগের বিয়ে নিয়ে বিতর্ক, মামলা, সব বিতর্কের ডালপালা ছেঁটে অবশেষে পরিণয়! বলিউডের কোনো সিনেমার চিত্রনাট্য হিসেবে ভারতীয় টনিস তারকা সানিয়া মির্জা ও পাকিস্তানি ক্রিকেটার শোয়েব মালিকের বিয়েটা বেশ ভালো। সানিয়া-মালিকের বিয়ে হয় গত বছরের ১২ এপ্রিল। এর কয়েকদিন পরই বিয়েতে সৃষ্ট বিতর্কের ওপর ভিত্তি করে সিনেমা নির্মাণের চেষ্টা করেন বলিউডের এক পরিচালক। সিনেমার নাম দেয়া হয় হায়দরাবাদি দামাদ (হায়দরাবাদের জামাই)। সানিয়ার চরিত্রে অভিনয় করার জন্য চুক্তিবদ্ধ করা হয় ভারতীয় টিভি অভিনেত্রী দেবিনা ব্যানার্জিকে। এখন দেবিনার দাবি, সেই সিনেমা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন তিনি।
বিয়ের বিতর্কের ওপর সিনেমা নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়েছে। নির্মাণ নিয়ে সানিয়াকে প্রশ্ন করেছিলো ভারতীয় একটি সংবাদ মাধ্যম। প্রশ্নটা শুনেই খেপে যান সানিয়া, ‘প্রথমত, শোয়েবের সাথে আমার বিয়ে কোনো উপাখ্যান নয়। এটা আমার জীবন। আর দ্বিতীয়ত, আমাদের বিয়ের সত্যিকারের ঘটনা খুব কম লোকেই জানে। আমি মনে করি না, কোনো কিছু সম্পর্কে পুরোপুরি না জেনে কেউ সেই বিষয়ের ওপর সিনেমা বানাতে পারেন?’
দীর্ঘ এক বছর পর পাকিস্তান দলে ফিরেছেন শোয়েব মালিক। ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনের পেছনে মালিক কৃতিত্ব দিয়েছেন স্ত্রী সানিয়াকে। জানিয়েছেন, দুর্দিনে স্ত্রী তাকে যথেষ্ট সহায়তা করেছেন। এ প্রসঙ্গে সানিয়ার প্রতিক্রিয়া, ‘একজন স্ত্রী তার স্বামীর জন্য যা করে, আমি কেবল তা-ই করেছি। বিভিন্ন কাজে ও নিজেও আমাকে বেশ সাহায্য করেছে।’
বিয়ের পর সানিয়া-মালিক দম্পতি ঘর বেঁধেছেন দুবাইয়ে। টেনিস নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন সানিয়া। ভারতে বা পাকিস্তানে ফেরার পরিকল্পনা আছে কি-না এ প্রশ্নে সানিয়ার জবাব, ‘আমাদের জীবন নিয়ে আমরা সুখী। একটাই দুঃখ, ব্যস্ততার কারণে ওকে খুব বেশি সময় দিতে পারছি না আমি।’
দুই ভুবনের দুই তারকার বিয়ে নিয়ে বিতর্ক হয়েছে অনেক। হায়দরাবাদেরই এক মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকির সাথে শোয়েবের প্রথম বিয়ে নিয়ে জন্ম হয় এ বিতর্কের। টেলিফোনে আয়েশাকে বিয়ের কথা শোয়েব প্রথমে অস্বীকার করেন। শোয়েব বলেন, ‘আয়েশা ছলনা করে আমাকে বিয়ে করতে বাধ্য করেছিলেন।’ তবে শেষ পর্যন্ত প্রথম বিয়ের কথা স্বীকার করে আয়েশাকে তালাক দেন পাকিস্তানি এ অলরাউন্ডার।
এ রকম একটি পরিস্থিতিতে আয়েশার পরিবারই শোয়েব মালিকের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামল দায়ের করে। এর জের ধরে হায়দরাবাদ পুলিশ শোয়েবের পাসপোর্ট জব্দ করে তাকে এক দফা জিজ্ঞাসাবাদও করে। তবে এ পুরো বিতর্কে শোয়েব মালিকের সবচেয়ে বড় ভরসা ছিলেন সানিয়া মির্জা নিজে। তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠেই বলেছিলেন, যেকোনো পরিস্থিতিতেই শোয়েব মালিকের পাশে আছেন তিনি।