গতকাল মঙ্গলবার শত শত শিশু ও অভিভাবককে হতাশ করেছে ভাগ্যের চাকা। আবার উল্লসিতও করেছে শত শত শিশু ও তাদের অভিভাবককে। গতকাল থেকে প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে রাজধানীর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোয় ১ম শ্রেণীতে ভর্তির উন্মুক্ত লটারি।

১ম দিন গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুল, তেজগাঁও সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, খিলগাঁও সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ও বেসরকারি ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে লটারি অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীর ২৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১ম শ্রেণী সংযুক্ত ১৩টি বিদ্যালয়কে ৩টি গুচ্ছে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ‘ক’ গুচ্ছের ৩টি বিদ্যালয়ের লটারি গতকাল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার ‘খ’ এবং আগামীকাল বৃহস্পতিবার ‘গ’ গুচ্ছের লটারি অনুষ্ঠিত হবে। ‘ক’ গুচ্ছের অন্তর্ভুক্ত বিদ্যালয়গুলোতে সকাল ১০টা থেকে প্রভাতি এবং বেলা ২টা থেকে দিবা শাখার লটারি অনুষ্ঠিত হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নোমান উর রশীদ গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুলের লটারি কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) জাকির হোসেন, স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবদুল খালেক, সহকারী প্রধান শিক্ষক ইনছান আলীসহ অন্যান্য শিক্ষক এ সময় উপস্থিত ছিলেন। একটি কাচের স্বচ্ছ বাক্সে আলাদাভাবে ছিল আবেদনকারী সব শিক্ষার্থীর ক্রমিক নম্বর ও নাম। বাক্সটি হাতে নিয়ে অনেকক্ষণ ঘুরিয়ে সবার সামনে ৩টি শিশু একেক করে নম্বর উত্তোলন করে। ১ম দফায় যাদের নাম উঠেছে, তারা ভর্তির সুযোগ পাবে। এর বাইরে ২য় দফায় অপেক্ষমাণ তালিকাও লটারির মাধ্যমে নির্বাচন করা হয়। লটারি কার্যক্রম প্রজেক্টরের মাধ্যমে মাঠে অভিভাবকদের সরাসরি দেখানো হয়। নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে ভর্তি হতে হবে। আজ বুধবার ‘খ’ গুচ্ছের মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়, নারিন্দা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, শেরেবাংলা নগর সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়, সরকারি বিজ্ঞান কলেজ সংযুক্ত হাইস্কুল ও মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তির লটারি অনুষ্ঠিত হবে। ৭জন অভিভাবক মঞ্চে গিয়ে ৭টি নম্বর তুললেন। কম্পিউটার এই নম্বরগুলোর ভিত্তিতে একেক শিশুর ভাগ্য নির্ধারণ করে। মঞ্চের সামনে বড় প্রজেক্টরে যাদের নাম উঠছে, তাদের অভিভাবকদের মধ্যে খুশির বন্যা বইতে থাকে। যাদের নাম নেই, তাদের অভিভাবকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ১ম শ্রেণীতে ভর্তির লটারির ১ম দিনের চিত্র ছিল এটি। লটারির উদ্বোধনীতে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগম বলেন, লটারি পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তির প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন বাধা এসেছে। তবে শতভাগ সফল এই উদ্যোগ মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাংসদ রাশেদ খান মেনন এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খান লটারি স্বচ্ছভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। গতকাল সব শাখার বোনের কোটা, আজিমপুর কলোনির কোটা, বসুন্ধরা, ধানমন্ডি এবং আজিমপুর প্রভাতি ও দিবা শাখার লটারি অনুষ্ঠিত হয়। এই প্রতিষ্ঠানে সব মিলিয়ে ১ম শ্রেণীর আসন আছে ১,৫৬৮টি। এর মধ্যে শিক্ষক-কর্মচারী ও প্রতিষ্ঠানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য মোট ৭৮টি সংরক্ষিত আসনে লটারি হয়নি। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে মূল শাখার ইংরেজি-মাধ্যম, সাড়ে ১১টা থেকে মূল দিবা ও বিকেল ৩টা থেকে মূল প্রভাতি শাখার লটারি অনুষ্ঠিত হবে। ১টি প্রবেশপত্রের বিপরীতে ১ জন নারী অভিভাবক ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারবেন। শিশুদের সঙ্গে না আনতে অনুরোধ জানিয়েছে বিদ্যালয়টি। লটারির ফলাফল www.vnsc.edu.bd এবং dhakabiz.com ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে।