পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা তাদের ৯ দফা দাবি থেকে সরে এসে এবার ‘ভিসির অপসারণ চাই’ একদফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছে।

এ দাবিতে রোববার তারা বিক্ষোভ মিছিল ও মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে।

এদিকে অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিবহন শ্রমিকদের মারপিটে পাবিপ্রবির ৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মোজাফফর হোসেনের অপসারণ দাবিতে শহরের রাজাপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসের সামনে ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা।

এসময় ঢাকা থেকে ঈশা পরিবহন নামে একটি বাস শিক্ষার্থীদের অবরোধ উপেক্ষা করে পাবনা বাস টার্মিনালের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে। এনিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ওই বাস শ্রমিকদের কথা কাটাকাটি হয়। এরপর ঈশা পরিবহন বাসটি টার্মিনালে গেলে সেখানে অবস্থানরত অপর কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে আবারও কথা কাটাকাটি হয়।

একপর্যায়ে টার্মিনালে উপস্থিত উত্তেজিত পরিবহন শ্রমিকরা শিক্ষার্থীদের মারপিট করে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র সুজন ইসলাম, কামরান হোসেন, দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আসিফ ইকবালসহ ৫ শিক্ষার্থী আহত হয়।

পাবিপ্রবির ছাত্র বাকিবিল্লাহ জানান, শর্টসেমিস্টার পদ্ধতি চালু, জিপিএ নির্ণয় পদ্ধতি সংশোধন, অভিজ্ঞ শিক্ষক নিয়োগ, নতুন প্রক্টরিয়াল বডি গঠনসহ ৯ দফা দাবি নিয়ে গত ১৭ জুলাই থেকে ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন তারা।

বাকি বিল্লাহ আরও জানান, আন্দোলনের একপর্যায়ে গত ২৬ জুলাই পাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ প্রহসনমূলকভাবে একটি প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কিছু শর্তসাপেক্ষে তাদের দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়া হবে বলে জানান।

শনিবার দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ওই প্রেসবিজ্ঞপ্তি প্রত্যাখ্যান করে ভিসির অপসারণ দাবি করে একদফা দাবির নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা।

এরই ধারাবাহিকতায় রোববার দুপুরে পাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মোজাফফর হোসেনের অপসারণের দাবিতে ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করেন।

এ সময় প্রতিবাদ সংক্ষিপ্ত সভায় বক্তব্য দেন বাকি বিল্লাহ, আবিদ হোসাইন, মাহাদী হোসেন, খালেদ হোসেন ও শান্ত।

প্রতিবাদ সভায় শিক্ষার্থীরা জানান, পাবিপ্রবির অযোগ্য, দুর্নীতিবাজ ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মোজাফফর হোসেনের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন অব্যাহত রাখবে।

এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পাবিপ্রবির ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মোজাফর হোসেন বাংলানিউজকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়া বাস্তবায়নের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু শিক্ষার্থীরাই তাদের সঙ্গে না বসে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করছে।

প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে গত ১৭ জুলাই থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাসবর্জন শুরু করে অবস্থান ধর্মঘট, পাবনা-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতীকী অনশনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে।