বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ভিসি ও প্রো-ভিসির পদত্যাগের দাবিতে ভিসির কার্যালয় সামনে লাগাতার অবস্থান ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছেন অন্দোলনরত শিক্ষকরা।
বুধবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে ক্যাম্পাসে মৌন মিছিল শেষে ভিসি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন তারা। মিছিলে শিক্ষকদের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত তারা অবস্থান ধর্মঘট পালন করবেন।
এর আগে শিক্ষক সমিতির পূর্ব নির্ধারিত জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মুজিবুর রহমান। আরো উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফুল ইসলাম ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আতাউর রহমানসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ।
মঙ্গলবার ভিসি ও প্রা-ভিসির পদত্যাগের দাবিতে বুয়েট শহীদ মিনারে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শিক্ষক সমিতি ভিসি ও প্রো-ভিসির পদত্যাগ নিয়ে সৃষ্ট সমস্যা নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বুয়েটের আচার্য রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের হস্তক্ষেপ চায়। সমাবেশের আগে শিক্ষক সমিতির একটি মৌনমিছিল বের করে। যাতে বুয়েটের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরাও অংশ নেয়।
শিক্ষক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক সমিতির দাবি অনুযায়ী ভিসি ও প্রো-ভিসি পদত্যাগ না করায় আবার আন্দোলনে যাচ্ছে শিক্ষক সমিতি। এ জন্য ৩ জুলাই শিক্ষক সমিতি সভাপতি অধ্যাপক ড. মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এক জরুরি সভায় ভিসি ও প্রো-ভিসি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও দাবি আদায়ে ৭ জুলাই থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত সকাল ১১ টা থেকে ১ টা পর্যন্ত কর্মবিরতিসহ বিক্ষোভ সমাবেশ পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
যদি এই সময়ের মধ্যে ভিসি ও প্রো-ভিসি পদত্যাগ না করেন তাহলে আগামী ১৪ জুলাই হতে লাগাতার পূর্ণ কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে বুয়েট শিক্ষক সমিতি। ভিসি ও প্রো-ভিসির পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষক সমিতি মৌনমিছিল, মানববন্ধন, ভিসি ও প্রো-ভিসির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে না যাওয়াসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। ৩০ জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয় শিক্ষক সমিতি। দাবি পূর্ণ না হওয়ায় আবারো কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেয়া হলেছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক সমিতি সভাপতি অধ্যাপক ড. মুজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষকদের দাবি না মানার জন্যই আবারো আন্দোলন যেতে হচ্ছে। শিক্ষক সমিতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করলেও শিক্ষকদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই আবার কর্মরিতিতে যেতে হচ্ছে। আশা করি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে ভিসি ও প্রো-ভিসি পদত্যাগ করবেন।’’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েটে) ভিসির বিভিন্ন বিষয়ে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে এবং ভিসি প্রোভিসির পদত্যাগের দাবি সহ ১৬টি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। ভিসি ও প্রো-ভিসির পদত্যাগের দাবিতে ৭ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত কর্মরিতি পালন করে বুয়েট শিক্ষক সমিতি। প্রধানমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রী এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা জানালেও এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। যার কারণে আবার আন্দোলন শুরু করেছেন বুয়েটের শিক্ষকরা।