মালিকানা অথবা পদের দ্বন্দ্বে সৃষ্ট অচলাবস্থা নিরসনে ব্যর্থ হওয়ায় চারটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনার দায়িত্ব নিতে যাচ্ছে সরকার। পাঁচ দফায় আল্টিমেটাম দিয়েও অচলাবস্থা নিরসনে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টিবোর্ড ব্যর্থ হওয়ায় শিক্ষার্থীদের স্বার্থে অধ্যাদেশ অনুসারেই প্রথমবারের মতো এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

মালিকানার দ্বন্দ্বে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়া এ তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং ইবাইস ইউনিভার্সিটি।

সূত্র জানিয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ওই তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক দাবিদার সকল পক্ষকেই জানিয়েছে, ‘‘আমরা আমাদের সন্তানদের কোনো সংঘাতপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে পাঠাতে পারি না।’’

জানা গেছে, আইন অনুসারে নিজস্ব কমিটি গঠন করে পরিচালনার মাধ্যমে বৈধ মালিকের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তিনটিকে। অন্যদিকে রাজধানীর প্রাইম ইউনিভার্সিটির আসল মালিক খোঁজা নিয়েও চরম বেকায়দার রয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অন্তত ৫ দফা এ তিন প্রতিষ্ঠানকে মালিকানা অথবা পদের বিরোধ মিটিয়ে আসার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ তিন মাস আগে কঠোর আদেশ জারি করে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিকানার দাবিদার সকল পক্ষকেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ‘‘এই সময়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব মিটিয়ে চলমান অচলাবস্থা নিরসন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে অবগত করুন। অনথ্যায় আইন অনুসারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কারণ, আমরা আমাদের সন্তানদের কোনো সংঘাতপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে পাঠাতে পারি না।’’

কিন্তু আজ পর্যন্ত তিন প্রতিষ্ঠান সরকারের আদেশে কর্ণপাত করেনি। বরং প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সনদবাণিজ্য, দখল-পাল্টা দখলে অচলাবস্থার অভিযোগই বাড়ছে। এ অবস্থায় শিগগিরই সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

একই সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য একটি কমিটির মাধ্যমে পরিচালনা করে বিরোধ নিষ্পত্তি শেষে প্রতিষ্ঠানগুলোকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে বৈধ ট্রাস্টি বোর্ড বা মালিকপক্ষের হাতে।

এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) কাজী সালাউদ্দিন আকবর বলেন, শিক্ষার্থীদের স্বার্থেই শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার দায়িত্ব নেবে সরকার। অধ্যাদেশেই স্পষ্ট করে এ ধরনের অবস্থায় যে আচার্য ও সরকারকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের ৩৫(৭) এ শিক্ষা কার্যক্রম সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘কোনো কারণে কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা দেখা দিলে কিংবা উহার স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত ও শিক্ষার্থীদের ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখিবার স্বার্থে আচার্য মন্ত্রণালয় ও কমিশনের সুপারিশক্রমে প্রয়োজনীয় আদেশ ও নির্দেশ দিতে পারবেন। এ বিষয়ে আচার্যের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।’