লিবিয়ার বিতাড়িত শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির জন্মস্থান সির্ত দখলের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বিদ্রোহী সেনারা৷ গাদ্দাফিপন্থীদের সঙ্গে বিদ্রোহীদের লড়াইয়ের খবর জানাচ্ছে বার্তাসংস্থাগুলো৷ সংঘর্ষের মুখে শহর ছাড়ছে সাধারণ মানুষ৷

লিবিয়ার বিদ্রোহীরা সির্ত শহর দখলের চূড়ান্ত লড়াই শুরু করে শুক্রবার৷ ইতিমধ্যে শহরটির অনেকাংশে তারা প্রবেশ করেছে, বিশেষ করে শহরের রাস্তাগুলো দখল করে নিচ্ছে বিদ্রোহী বাহিনী৷ তবে প্রতিরোধ অব্যাহত রেখেছে গাদ্দাফিপন্থী সেনারাও৷ ফলে যত সহজে সির্ত দখল সম্ভব হবে মনে করা হয়েছিল, ততটা সহজ আসলে হচ্ছে না৷ সেই শহরে গোলাবর্ষণের খবর জানাচ্ছে বার্তাসংস্থাগুলো৷ শহরের কেন্দ্রের দিকে ট্যাংক ব্যবহার করে অভিযান চালাচ্ছে ন্যাশনাল ট্রানজিশনাল কাউন্সিল বা এনটিসি সমর্থিত বিদ্রোহীরা৷ এনটিসি কমিশনার নাসের আবু জিয়ান শনিবার দাবি করেছেন, আমরা গাদ্দাফিপন্থী সেনাদেরকে শহরের কেন্দ্রে মাত্র কয়েক কিলোমিটার এলাকার মধ্যে ঘিরে ফেলেছি৷

এনটিসি বাহিনী কার্যত লিবিয়ার প্রায় সব অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে, এবং সেটা দুই মাস আগেই৷ তবে মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে এখনো আটক সম্ভব হয়নি, তিনি কোথায় আছেন সেটাও অজানা৷ গাদ্দাফি পরিবারের অনেক সদস্য লিবিয়া ত্যাগ করেছে বলে জানা গেলেও, গাদ্দাফির কোন খবর নেই৷ এমতাবস্থায় সির্ত গাদ্দাফিপন্থীদের দখলে থাকায়, সেদেশের ন্যাশনাল ট্রানজিশনাল কাউন্সিল আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করতে পারছে না৷ সেই সঙ্গে লিবিয়ায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিনতারিখ ঘোষণাও সম্ভব হবে না, সির্ত এর পতনের আগে৷ বনি ওয়ালিদ নামক আরেকটি এলাকাও অবশ্য গাদ্দাফিপন্থীদের নিয়ন্ত্রণে আছে৷ তবে সেটাকে বর্তমানে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না এনটিসি৷  এসটিসি’র তথ্যমন্ত্রী মাহমুদ সোহামান দাবি করেছেন, গাদ্দাফির সেনারা সির্ত শহরের বাসিন্দাদের জিম্মি করে রেখেছে৷ এছাড়া সেখানকার হাসপাতালগুলোতে আহতের ভিড় বাড়ছে৷ সেখানকার ডাক্তাররা জানিয়েছেন, শুক্রবার কমপক্ষে ১২ জন নিহত এবং ১৯০ জন আহত হয়েছে৷ হতাহতদের অধিকাংশই মাথায়, ঘাড়ে কিংবা বুকে গুলিবিদ্ধ হয়েছে৷

এছাড়া, সির্ত শহর ছেড়েও চলে গেছে অনেক মানুষ৷ শহর থেকে বের হওয়ার নিরাপত্তা চৌকির সামনে লম্বা লাইন দেখা যাচ্ছে৷ অবশ্য এখনো কেউ কেউ ঝুঁকি নিয়ে শহরের মধ্যে অবস্থান করছেন৷ সবমিলিয়ে এক অস্থির পরিস্থিতি বিরাজ করছে সির্ত শহরে৷