লিবিয়ার ক্ষমতাচ্যুত সাবেক নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির এক ছেলে মোতাস্সিম বিদ্রোহীদের হাতে ধরা পড়েছেন বলে জানা গেছে৷ খবরের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও, অন্ততপক্ষে এমনই দাবি দেশটির অন্তর্বর্তী জাতীয় পরিষদ বা এনটিসি’র যোদ্ধাদের৷

 বার্তা সংস্থা রয়টার্স’কে বিদ্রোহী যোদ্ধারা জানায়, যুদ্ধবিক্ষুব্ধ উপকূলীয় শহর সির্ত থেকে বুধবার গাড়ি করে পালানোর চেষ্টার সময় ধরা পড়েন মোতাস্সিম৷ এই গ্রেপ্তারের কথা স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান এনটিসি বাহিনীর প্রধান মুস্তাফা আব্দেল জলিল৷

এখানেই শেষ নয়৷ এরপর মোতাস্সিমকে বেনগাজিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং সেখানকার ‘বোথনে’ সেনাক্যাম্পে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে আল-জাজিরা টেলিভিশনকে জানিয়েছেন এনটিসি বাহিনীর কর্নেল আবদুল্লাহ নাকের৷ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, মোতাস্সিম এখনও অক্ষত অবস্থায় আছেন বলে জানানো হয়েছে৷ তবে সেখান থেকেও তিনি পালানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে প্রকাশ৷

এদিকে, মোতাস্সিম-এর আটকের খবর প্রচার হওয়ার পর, এনটিসি যোদ্ধারা লিবিয়ার বিভিন্ন শহরের রাস্তায় ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে উল্লাস প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন আরবি চ্যানেল৷

৩৪ বছর বয়স্ক মোতাস্সিম গাদ্দাফি সরকারের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ছিলেন৷ এবং তিনিই গাদ্দাফি পরিবারের প্রথম সদস্য যিনি এনটিসি যোদ্ধাদের হাতে ধরা পড়লেন৷ তাই গাদ্দাফির শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত সির্ত শহর থেকে তিনি ধরা পড়ায়, এটাকে এনটিসি যোদ্ধাদের জন্য এক বড় সাফল্য বলে বিবেচনা করা হচ্ছে৷ এর আগে গাদ্দাফির দুই পুত্রের ধরা পড়ার খবর বেরিয়েছিল৷ কিন্তু তা সত্য প্রমাণিত হয়নি৷

উল্লেখ্য, বর্তমানে সির্ত শহরে গাদ্দাফি অনুগত বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে এনটিসি’র যোদ্ধারা৷ তাই এই মুহূর্তে গাদ্দাফি বাহিনীকে কোণঠাসা করে ফেলেছে বলে দাবি করলেও, এখনও প্রবল প্রতিরোধের মুখোমুখি হচ্ছে তারা৷ তবে শুধু সির্ত-ই নয়, মরুভূমির শহর বলে খ্যাত পাহাড়ে ঘেরা বানি ওয়ালিদ-ও নিজেদের দখলে আনার আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছে লিবিয়ার এই নতুন শাসক দল৷ সেখানেই গাদ্দাফি-অনুগত প্রায় এক হাজার সেনা অবস্থান করছে বলে জানাচ্ছে আল-জাজিরা টেলিভিশন৷

ওদিকে, এহেন লড়াই থেকে নিজেদের বাঁচাতে শহরের বহু সাধারণ মানুষই সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে৷ অবশ্য এরপরও সির্ত শহরের ৮০ ভাগেরও বেশি তাদের নিয়ন্ত্রণে বলে দাবি করেছেন এনটিসি কমান্ডার মাস্তা হামজা৷ তাঁর কথায়, ‘সির্ত দখলের পর লিবিয়াকে সম্পূর্ণ স্বাধীন বলে ঘোষণা করবে এনটিসি’৷

স্বাভাবিকভাবেই, শীঘ্রই লিবিয়া সমস্যার একটি সমাপ্তি দেখতে চায় আন্তর্জাতিক সমাজ৷ শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, এনটিসি বাহিনী সির্ত দখলের একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে বলে মন্তব্য করেছেন ব্রিটেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিয়াম ফক্স৷