মঙ্গলবার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সংবাদ সংগ্রহের জন্য গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক এবং আনসার সদস্যরা সাংবাদিকদের নানাভাবে লাঞ্ছিত করে।

সাংবাদিকরা জানান, সকালে শাহ আলী থানা থেকে এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এই বিষয়ে সংবাদ সংগ্রহের জন্য সকাল সাড়ে ১০টায় সময় টিভির স্টাফ রিপোর্টার মাহবুব হোসেন ও ক্যামেরাম্যান মাহাদিউল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসেন।

এসময় জরুরি বিভাগের ইন্টার্নি চিকি‍ৎসকরা তাদের ঘিরে ধরে বলে- আপনারা কার পারমিশনে ঢুকেছেন। সবাই এখানে প্রবেশ করতে পারবে কিন্তু সাংবাদিক প্রবেশ নিষিদ্ধ। এক পর্যায়ে তারা সাংবাদিকদের  পরিচালকের কক্ষের সামনে দাঁড় করিয়ে রাখেন। প্রায় এক ঘণ্টা পর পরিচালক তাদেরকে শাসিয়ে দেন, “আর কোনোদিন বিনা অনুমতিতে ঢুকবেন না। ঢুকতে হলে আমার পারমশিন নিয়ে ঢুকবেন।”

অপরদিকে, যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশের খবর সংগ্রহ করতে আসা এনএনবির সিনিয়র রির্পোটার এসএম দেলোয়ার হোসেনকে জরুরি বিভাগের ফটকে আনসার সদস্য লিটন ও সুবল বাধা দেন। এসময় তারা জানান, ওপরের নির্দেশে হাসপাতালে সাংবাদিক প্রবেশ নিষেধ।

পরে বাংলানিউজের আবাদুজ্জামান শিমুল, বাংলাদেশ প্রতিদিনের মেডিকেল করেসপন্ডেন্ট আওরঙ্গজেব সজীব ও কালের কণ্ঠের সোহেল রানা, যুগান্তরের আমিনুল ইসলাম বাবু, এনটিভির আল আমিন, এটিএন নিউজের বুলবুল চৌধুরী (নানা ভাই) জুরুরি বিভাগ সংলগ্ন গেট দিয়ে প্রবেশ করতে চাইলে তাদেরকেও বাধা দেওয়া হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন আচরণ করা হয়।

এর আগে গত ১৯ জুলাই সার্জারি ওয়ার্ডের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. শহীদ হোসেন তারই তত্ত্বাবধানে ভর্তিকৃত আরিফুল হক চৌধুরী নামের এক রোগীর গালে চড় মারলে এতদসংক্রান্ত সংবাদ বাংলানিউজসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

এর জের ধরে ওইদিন ডা. শহীদের নির্দেশক্রমে ইন্টার্নি চিকি‍ৎসকরা মিছিল করে হাসপাতালে সাংবাদিক প্রবেশ নিষেধ করে।

এরপর সোমবার বিকেলে হাসপাতালের পরিচালক ব্রি. জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে সাংবাদিক প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়।

অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করে জারি করা তথ্য আইন উপেক্ষা করে ওই বিজ্ঞপ্তিতে লেখা ছিল, “সাংবাদিক প্রবেশ করতে হলে পরিচালকের অনুমতি নিয়ে পরিচালকের গেট দিয়ে প্রবেশ করতে হবে।”

এদিকে, ঢামেক হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন মিডিয়ার মেডিকেল করেসপন্ডেন্টদের অভিযোগ, প্রচলিত বিধি-বিধান অমান্য করে চিকি‍ৎসকদের কক্ষে বিভিন্ন ঔষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেনটেটিভদের হর-হামেশা ঢোকার ক্ষেত্রে কোনো বাধা না থাকলেও এ হাসপাতালে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এটা তথ্য অধিকার আইনের লঙ্ঘন।