শুভ জন্মদিন অমিতাভ বচ্চন। আজ কুলি দুর্ঘটনার ৩০ বছর। বিগ বি’র দ্বিতীয় জন্মের ৩০তম বার্ষিকী আজ। অমিতাভ বচ্চন নিজেও সেটিই মনে করেন। ৩০ বছর আগে ১৯৮২ সালের ২৬ জুলাই ব্যাঙ্গালোরে মনমোহন দেশাই’র ছবি কুলি’র শ্যুটিং চলাকালে ঘটে সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা।

সহশিল্পী পুনিত ইসারের  সঙ্গে  মারামারির একটি দৃশ্য ধারণ করার সময় ছুটে আসা টেবিলের কোনায় বুকে মারাত্মক আঘাত পান অমিতাভ বচ্চন। প্রচণ্ড রক্তপাত হচ্ছিলো তার। অন্যরা প্রথম ভাবলেন পরিচালকের ইচ্ছায় মিথ্যা রক্তপাত বুঝি। কিন্তু এক পর্যায়ে তাদের ভুল ভাঙ্গলো।

পরিচালক দেশাই দ্রুত ব্যবস্থা নিলেন নায়ক অমিতাভকে বিমানে মুম্বাই নিয়ে যাওয়ার। পুরো পথেই তিনি তখন অচেতন। সান্টা-ক্রুজ বিমানবন্দরে ইয়াশ চোপরা আগে থেকেই প্রস্তুত ছিলেন অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে। সরাসরি তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ব্রিচ ক্যান্ডি হসপিটালে। সেখানে চিকিৎসরা তার ক্ষতিগ্রস্ত পিত্তথলিতে দ্রুত সার্জারি করেন। মি. বচ্চন তখন মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে। গোটা জাতি শোকে ম্যুহমান। ভক্তরা ভীড় জমাতে শুরু করেন মন্দিরে মন্দিরে।

প্রিয় অভিনেতার জীবনের বিনিময়ে তারা যে কোনো আত্মত্যাগে প্রস্তুত। ব্রিচ ক্যন্ডি হাসপাতাল থেকে প্রতিদিন খালিপায়ে হেঁটে অমিতাভের স্ত্রী অভিনেত্রী জয়াবচ্চন যেতেন সিদ্ধি বিনায়ক মন্দিরে প্রার্থণা করতে। প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ছুটে যান হাসপাতালে অচেতন অমিতাভ বচ্চনকে দেখতে।

২ আগস্ট পর্যন্ত তার বাঁচার কোনো আশাই দিতে পারছিলেন না চিকিৎসকরা। শেষ চেষ্টা হিসেবে তারা বচ্চনের হৃদযন্ত্রে সরাসরি অ্যাডেনালাইন পুশ করলেন। আর ঠিক তখনই জয়া বচ্চন দেখতে পেলেন মহানায়কের এক পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলী একটু নড়ে উঠলো। তিনি চিৎকার করে উঠলেন, “দেখো… ও বেঁচে আছে।”  আর সেই থেকে ২ আগস্টে দ্বিতীয় জন্মলাভ হলো অমিতাভ বচ্চনের।

পুরোপুরি সুস্থ্য হয়ে উঠতে অমিতাভ বচ্চনকে হাসপাতালেই কাটাতে হলো আরও কয়েক মাস। সুস্থ হয়ে শ্যুটিং শেষ করলেন। ১৯৮৩ সালের ১৪ নভেম্বর মুক্তি পেলো সুপার ডুপার হিট হিন্দি ফিল্ম ‘কুলি’।