রাজধানীর পাইকারি বাজারে আমদানি করা মসুর ডালের দাম আরেক দফা বেড়েছে। এর প্রভাবে দেশী মসুর ডাল আগের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে অন্যান্য ডালের দাম কিছুটা কমেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এক সপ্তাহের ব্যবধানে আমদানি করা মসুর ডালের দাম কেজিপ্রতি ৩-৫ টাকা বেড়েছে। মূলত নেপালে দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাজারেও মসুর ডালের দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে বলে পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান। চাহিদা কমায় অন্যান্য ডালের দাম কমেছে।

পুরান ঢাকার রহমতগঞ্জ এলাকার পাইকারি ডাল ব্যবসায়ীরা জানান, গত সপ্তাহে রাজধানীর পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি দেশী মসুর ডালের দাম ছিল ১১৬-১১৮ টাকা।

গতকাল বৃহস্পতিবার তা ১১৮-১২০ টাকায় বিক্রি হয়। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি দিল্লি সুপার ডাল ১১৬-১২০ টাকায় বিক্রি হলেও গতকাল তা বিক্রি হয় ১২০-১২২ টাকা দরে।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাব অনুযায়ী, এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি নেপালি মসুর ডালের দাম ছিল ১১২-১১৫ টাকা। গতকাল তা বিক্রি হয়েছে ১১৫-১২০ টাকায়। এক মাসের ব্যবধানে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ এবং এক বছরের ব্যবধানে ২৭ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি দেশী মসুর ডালের দাম ছিল ১০৮-১১০ টাকা। গতকাল তা বিক্রি হয়েছে ১১২-১১৫ টাকায়। অর্থাত্ এক মাসের ব্যবধানে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ৩৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

পুরান ঢাকার রহমতগঞ্জ এলাকার পাইকারি ডাল ব্যবসায়ীরা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে মসুর ডালের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাজারেও দাম বেড়েছে। তবে আমদানি করা মোটা দানার ডালের দাম কমেছে। বর্তমানে প্রতি কেজি মোটা দানার মসুর ডাল ৬৫-৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তারা বলেন, বাজারে এখন বিক্রি খুবই কম। এ অবস্থায় দাম বেড়ে যাওয়ায় বিক্রি আরও কমেছে।

নারায়ণগঞ্জ ডাল ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাহী পরিচালক বিকাশ চন্দ্র সাহা  বলেন, নেপাল থেকে আমদানি করা মসুর ডালের দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে অন্য ডালের দাম কমেছে। আগে মোটা দানার ও নেপালি ডালের দামে ৪-১০ টাকার ব্যবধান ছিল। কিন্তু এখন প্রায় দ্বিগুণ ব্যবধানে বিক্রি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, নেপালি ডালের দাম বেড়ে যাওয়ার সুযোগে কেউ কেউ হয়তো দেশী চিকন ডাল বেশি দামে বিক্রি করছেন। ক্রেতারা মোটা দানার ডাল খাওয়া শুরু করলে অন্য ডালের দামে প্রভাব পড়বে না। কিন্তু দাম বাড়লেও ক্রেতারা চিকন ডাল পছন্দ করায় এর দাম বাড়ছে।

দেশের কুষ্টিয়া, যশোর, মেহেরপুর, ফরিদপুর, ঝিনাইদহসহ কয়েকটি জেলায় মসুর ডাল বেশি উত্পাদিত হয়। কিন্তু গত বছর কৃষক ভালো দাম না পাওয়ায় অনেকেই উত্পাদন থেকে দূরে ছিলেন। ফলে এ বছর উত্পাদন কম হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।