নিজস্ব অর্থায়নে দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য অনুদান সংগ্রহের লক্ষ্যে ব্যাংক হিসাব খুলতে সব বাণিজ্যিক ব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বুধবার পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য অনুদান সংগ্রহের জন্য ব্যাংক হিসাব খোলা এবং জমা হওয়া অর্থ সরকারি কোষাগারে স্থানান্তর নিয়ে একটি সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সার্কুলারটি বুধবারই সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য দেশবাসী ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছ থেকে স্থানীয় ও বৈদেশিক মুদ্রায় অনুদান সংগ্রহের লক্ষ্যে সব তফসিলি ব্যাংকের শাখায় ‘পদ্মা সেতু নির্মাণে স্বেচ্ছা অনুদান সহায়তা’ শিরোনামে সরকারের পক্ষে সংগ্রহের হিসাব (কালেকশন অ্যাকাউন্ট ) খুলতে হবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া অ্যাকাউন্ট চালিয়ে যেতে সার্কুলারে বলা হয়।
ব্যাংক হিসাব পরিচালনা ও জমা হওয়া অর্থ সরকারের কোষাগারে জমা করার প্রক্রিয়াও সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে।
দেশে অনুদানের অর্থ জমা নেওয়ার জন্য সবগুলো তফসিলি ব্যাংকের শাখাগুলো ‘পদ্মা সেতু নির্মাণে স্বেচ্ছা অনুদান সহায়তা (নিবাসী)’ সংগ্রহ হিসাব খুলতে বলা হয়েছে।
আর বৈদেশিক মুদ্রায় প্রবাসীদের অনুদান নেওয়ার জন্য তফসিলি ব্যাংকগুলোর বিদেশি ও অনুমোদিত শাখায় ‘পদ্মা সেতু নির্মাণে স্বেচ্ছা অনুদান সহায়তা (অনিবাসী)’ নামে বৈদেশিক মুদ্রায় সংগ্রহ হিসাব খুলতে হবে।
অনুদানের টাকা জমা নেওয়ার জন্য কোনো প্রকার সার্ভিস চার্জ নেওয়া যাবে না বলে সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়।
তফসিলি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে স্থানীয় মুদ্রায় ও বৈদেশিক মুদ্রায় সংগৃহীত অর্থ সোনালি ব্যাংকের স্থানীয় কার্যালয়ে জমা হবে। এ জন্য সোনালি ব্যাংকের স্থানীয় কার্যালয়ে স্থানীয় মুদ্রা জমার জন্য ‘পদ্মা সেতু নির্মাণে স্বেচ্ছা অনুদান সহায়তা (নিবাসী)’ এবং বৈদেশিক মুদ্রা জমার জন্য ‘পদ্মা সেতু নির্মাণে স্বেচ্ছা অনুদান সহায়তা (অনিবাসী)’ হিসাব খুলবে।
সোনালি ব্যাংকের স্থানীয় কার্যালয়ের সংশিষ্ট হিসাবে অনুদান জমা ও স্থানান্তরের ওপর মাসিক বিবরণী সংশিষ্ট ব্যাংক নিয়মিতভাবে অর্থ বিভাগে পাঠাবে। এর অনুলিপি দিতে হবে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালককে।
আর সোনালী ব্যাংক জমা হওয়া অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত সরকারী হিসাব নং ১ এর অধীনে সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত দু’টি পৃথক কোডে যথাবিধি নিয়মিতভাবে স্থানান্তর করা হবে।
গত ২৯ জুন দুর্নীতির বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়ার দাবি তুলে বিশ্ব ব্যাংক ২৯০ কোটি ডলারের পদ্মা সেতু প্রকল্পে ঋণ বাতিল করে। এই প্রকল্পে তাদের ১২০ কোটি ডলার দেওয়ার কথা ছিল।
বিশ্ব ব্যাংক সরে যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দেন, আর কেউ না এলে নিজস্ব অর্থায়নেই পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ প্রকল্পের জন্য অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সম্পদ সংগ্রহেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে পদ্মা সেতু নিয়ে দেন-দরবার চলার মধ্যেই পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পে মালয়শিয়া আগ্রহ দেখায়।
রোববার মালয়শিয়ার বিশেষ দূত এস সামি ভেলুর সঙ্গে বৈঠকের পর যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, তিন সপ্তাহের মধ্যে মালয়শিয়া এ বিষয়ে চূড়ান্ত প্রস্তাব দেবে।