কিংবদন্তি ক্রিকেটার ও পাকিস্তানের অন্যতম জনপ্রিয় রাজনীতিক ইমরান খানকে হত্যার হুমকি দিয়েছে পাকিস্তানের তালেবান। মার্কিন ড্রোন হামলার প্রতিবাদ জানাতে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়ার পর ইমরান খানকে হত্যার হুমকি দিয়েছে তালেবান। ডন, আলজাজিরা।
অবশ্য পাকিস্তান তালেবান ড্রোন হামলার তীব্র বিরোধিতা করে। কিন্তু ইমরান খানের ব্যক্তিগত দর্শনই তাদের রোষের কারণ বলে তারা জানিয়েছে। এ ব্যাপারে পাকিস্তান তালেবানের মুখপাত্র আহসানুল্লাহ আহসান বলেছেন, এ এলাকায় প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে এলে তারা ইমরানের ওপর হামলা চালাবেন। কারণ এ রাজনীতিক নিজেকে ‘উদারপন্থী’ বলে দাবি করেন। এ শব্দটি তাদের মতে ধর্মের প্রতি বিশ্বাসের ঘাটতিই নির্দেশ করে।
এদিকে ইমরান খানের ব্যাপারে তালেবানের এ প্রাণনাশের হুমকিতে খোদ পাকিস্তানেই অনেকে বিস্মিত হয়েছে। কারণ তালেবানের ব্যাপারে যথেষ্ট কঠোর অবস্থান না নিয়ে বরং পাকিস্তান-মার্কিন সম্পর্কের সমালোচনায় গুরুত্ব দেওয়ায় অনেকে তার সমালোচনা করে থাকেন। আর সেই তালেবানই এখন তার প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে।
গত সোমবার তালেবান মুখপাত্র আহসান বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেন, ‘তালেবানের শক্ত ঘাঁটি দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে এলে ইমরানকে হত্যা করা  হবে।’
উল্লেখ্য, নির্বাচনে ডানপন্থী ভোটারদের সমর্থন পেতে রক্ষণশীল ধর্মীয় দলগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখা এবং ডানপন্থী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে ইমরানের অনেক সমালোচক তাকে ‘তালেবান খান’ বলে অভিহিত করে। 
তবে বিভিন্ন টেলিভিশন সাক্ষাত্কারে ইমরান খান নিজেকে উদারপন্থী বলে দাবি করেন। সেই সঙ্গে এও পরিষ্কার করে বলেন, তিনি একজন মুসলিম এবং ইসলামের অনুশাসন মেনে চলেন। কিন্তু ইমরানের এ দৃষ্টিভঙ্গিতেও সন্তুষ্ট নয় পাকিস্তান তালেবান। মার্কিন ড্রোন হামলা প্রতিরোধে তারা তার সাহায্য নিতে চায় না। উল্লেখ্য, ড্রোন হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে কয়েক হাজার মানুষকে নিয়ে আগামী সেপ্টেম্বরে ওয়াজিরিস্তানে একটি শোভাযাত্রা করার পরিকল্পনা করেছেন তেহরিক-ই-ইনসাফের নেতা ইমরান খান।
কিন্তু পাকিস্তান তালেবানের মুখপাত্র আহসান বলছেন, ‘আমরা কোনো অবিশ্বাসীর কাছ থেকে সহানুভূতি চাই না। আল্লাহর সাহায্যে আমরা একাই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারব।’ তিনি বলেন, যে দলই নির্বাচনে অংশ নেবে এমনকি সে ধর্মীয় রাজনৈতিক দল হলেও সে আসলে অবিশ্বাসী এবং সে তালেবানের টার্গেটে পরিণত হবে। তালেবান মুখপাত্রের এ হুমকির ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে ইমরানের দলের কোনো মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।