ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র বাসচাপায় নিহতের প্রতিবাদে গাড়ি ভাংচুরের পর বন্ধ থাকা শাহবাগ মোড় গাড়ি চলাচলের জন্য খুলে দিয়েছে পুলিশ। বুধবার দুপুর ১টা থেকে ক্যাম্পাস সংলগ্ন শাহবাগ মোড় দিয়ে গাড়ি চলাচল শুরু হয়। এর আগে সকাল থেকে গাড়ি চলাচল বন্ধের সময় বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। তারা কফিন মিছিলও করে।

মঙ্গলবার বিকালে শাহবাগে রাস্তা পার হওয়ার সময় রাজধানী এক্সপ্রেসের একটি বাসের নিচে পড়ে আহত হন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তৌহিদুজ্জামান।

রাতে হাসপাতালে তার মৃত্যু হলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শাহবাগ, রূপসী বাংলা হোটেলের সামনে ও নিউ মার্কেট এলাকায় ৪০টিরও বেশি বাস ও গাড়ি ভাংচুর করে। ছাত্ররা কয়েকটি বাসে আগুন ধরিয়ে দিলে রাত ৮টা থেকে পৌনে ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

রাত ১২টার পর যান চলাচল শুরু হলেও সকালে শাহবাগ মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। তখন সব গাড়িকে রূপসী বাংলা হোটেলের সামনে দিয়ে চলাচল করতে হয়েছে।

এতে বাংলামটর, কারওয়ানবাজার, কাকরাইল ও পল্টনসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে সকাল সোয়া ১১টার দিকে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী মধুর ক্যান্টিন থেকে কফিন মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ে আসে। সেখানে সমাবেশ করে তারা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ছাত্র তৌহিদুজ্জামানের লাশ রাতেই তার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জে পাঠানো হয়। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কয়েকটি দাবি জানায়। এর মধ্যে রয়েছে শাহবাগ মোড়ে আন্ডারপাস নির্মাণ, দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বাসচালক এবং সেখানে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের শাস্তি, নিহতের পরিবার এবং মঙ্গলবার রাতে গুলিবিদ্ধ ও আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার খরচ দেওয়া, বাইরের গাড়ি ক্যাম্পাসে চলাচল বন্ধ ও ক্যাম্পাসে প্রবেশপথগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা ইত্যাদি।

২০০৫ সালের ২৮ মে এই শাহবাগ মোড়েই বাসচাপায় নিহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী শাম্মী আক্তার হ্যাপী। তখন ছাত্রদের বিক্ষোভের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শাহবাগ মোড়ে আন্ডারপাস নির্মাণের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

পৌনে ১টায় ওই শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় ছেড়ে গেলে ছয় ঘণ্টা পর গাড়ি চলাচল শুরু হয়।