রেলের বহুল আলোচিত অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় সাবেক রেলমন্ত্রী ও বর্তমানে দপ্তরবিহীনমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) ওমর ফারুকের গাড়ির চালক আজম খান বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেন, টাকা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বাড়িতেই যাচ্ছিল। ওদিকে যাওয়ার পথেই আমি ঘটনা ঘটিয়ে ফেলি। এর আগেও কয়েকবার টাকা গেছে।
আজম খান আরও বলেন, রেলের নিয়োগের ৭৪ লাখ টাকা মন্ত্রীর বাড়িতেই নেওয়া হচ্ছিল। টাকা বস্তায় ভরে চালক তা নিজেই গাড়িতে তোলেন। ওমর ফারুক রেলের নিয়োগ বাণিজ্য সিন্ডিকেটের মূল হোতা বলেও তিনি দাবি করেন।
আজমের ভাষ্য, বিপুল পরিমাণ টাকাসহ গাড়ি বিজিবিতে ঢুকিয়ে দেওয়ার সময় ওমর ফারুক তাঁর কাছে জানতে চান, গাড়ি নিয়ে তিনি কোথায় যাচ্ছেন? আজম দাবি করেন, ‘তখন আমি বললাম স্যার, এগুলো ঘুষের টাকা, দুর্নীতির টাকা, রেলের দুর্নীতির টাকা, এই টাকাসহ আমি আপনাদের ধরিয়ে দেব। এ জন্য আমি গাড়িটা ভেতরে ঢুকিয়েছি।’
বিজিবির ভেতরে গাড়ি ঢুকিয়ে দেওয়ার পর ওমর ফারুক প্রথমে ভয় দেখান এবং পরে অর্থের লোভ দেখান বলে আজম খান দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘ফারুক সাহেব তখন বললেন, “তুমি যে গাড়িটা ঢুকিয়েছ এটা ঠিক করনি।” পরে ওমর ফারুক তাঁকে বলেন, “এখান থেকে পাঁচ লাখ টাকা নাও। তুমি জিএম, নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে নামিয়ে দাও। আর এখানের অর্ধেক তোমার, বাকি অর্ধেক আমার”।’ আজমের দাবি, তিনি রাজি না হলে ফারুক তাঁকে সব টাকা দিয়ে দেওয়ার লোভ দেখান।
গত ৯ এপ্রিল রাতে বিপুল পরিমাণ টাকাসহ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ঝিগাতলা গেট দিয়ে একটি গাড়ি ভেতরে ঢুকে পড়ে। ওই গাড়িটি ওমর ফারুকের আর সেটি চালাচ্ছিলেন আজম খান। গাড়ির যাত্রী ছিলেন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ইউসুফ আলী মৃধা, তাঁর নিরাপত্তা কর্মকর্তা রেলওয়ের কমান্ড্যান্ট এনামুল হক ও রেলমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) ওমর ফারুক তালুকদার। তাঁরা কেউই এখন স্বপদে বহাল নেই।