অধিকাংশ সংসদ সদস্য নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে জড়িত উল্লেখ করে টিআইবির জরিপ প্রতিবেদনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্পিকার আবদুল হামিদ। যে ৬০০ জনের মতামতের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে, তাদের পরিচয় নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তিনি। স্পিকার মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেছেন, ৯৭ শতাংশ সংসদ সদস্য নেতিবাচক কাজের সঙ্গে জড়িত বলে টিআইবি যে প্রতিবেদন দিয়েছে, তা সংসদ ও সংসদ সদস্যদের হেয়করার জন্য দেয়া হয়েছে। “এই ধরনের প্রতিবেদন দেখেসংসদ সদস্য হিসেবে আমিও অপমানিত বোধ করছি,” বলেন তিনি। দেশের অর্ধেক সংসদীয় আসনের সদস্যদের ওপর ‘গবেষণা’ চালিয়ে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ(টিআইবি) রোববার এক প্রতিবেদনে বলে, সংসদ সদস্যদের ৯৭ শতাংশই বিভিন্ন ‘নেতিবাচক কার্যক্রমে’ জড়িত। স্পিকার বলেন, কোনো মানদণ্ডেই এটাকে জরিপ বলাযায় না। “দেশে ১৬ কোটি মানুষ, ৬৪টি জেলা। টিআইবি ৪২ জেলা এবং মাত্র ৬০০ লোকেরমতামত নিয়ে জরিপ করেছে। এদের কথার ওপর ভিত্তি করেই বলে দিল, ৯৭ শতাংশ সংসদ সদস্য খারাপ। এটা কিঠিক হল?” জরিপে অংশ নেয়াদের বিষয়ে আবদুল হামিদ বলেন, “আমার প্রশ্ন হল- টিআইবি যে ৬০০ লোকের মতামত গ্রহণ করেছে,তারা কারা? এরা কি টিআইবির লোক? তা যদি হয়, তাহলে তো জরিপ বিজ্ঞানসম্মত হল না।” “৯৭ শতাংশ সংসদ সদস্য খারাপের অর্থ হল ৩০০ জনেরমধ্যে মাত্র নয়জন ভালো। এর অর্থ কি এই নয় যে, ২৯১ জন সংসদ সদস্য সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে?” “এমন ঘটলে তো এতদিনে দেশের মানুষ রুখে দাঁড়াত।কারণ এদেশের মানুষ যথেষ্টসচেতন। কিন্তু সে রকম ঘটনা তো কোথাও ঘটেনি, দেখাও যায়নি,” যোগ করেন তিনি। টিআইবির ওই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলেছে, অনির্বাচিতদের ক্ষমতায় আনার পথ তৈরিতে এই প্রতিবেদনের যোগসাজশ থাকতে পারে। অন্যদিকে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি বলেছে, এই প্রতিবেদন সরকারি দলের জন্য প্রযোজ্য। সংসদ ভবন এলাকায় মঙ্গলবারবৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন স্পিকার। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে টিআইবির প্রতিবেদন নিয়ে কথা বলেন তিনি। টিআইবির প্রতিবেদনে সংসদের কোরাম সঙ্কট নিয়ে যা বলা হয়েছে, সে বিষয়ে আবদুল হামিদ এজন্য ‘দেরিরসংস্কৃতিকে’ দায়ী করেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সংস্কৃতি হল ৯টার অনুষ্ঠান সাড়ে ৯টায় শুরু হবে। কিন্তু জাতীয় সংসদেরঅধিবেশন তো কখনো আঘ ঘণ্টাদেরিতে শুরু হয় না, পাঁচ-দশ মিনিট এদিক-সেদিকহয়। সারা দুনিয়াতেই এমনই হয়। এতে সংসদের ব্যয় কীভাবে বেড়ে যায় তা আমার বোধগম্য নয়।” বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্পিকারের সঙ্গে সংসদের ভারপ্রাপ্ত সচিব মাহ্ফুজুর রহমান ও স্পিকারের একান্ত সচিব জয়নাল আবেদীনসহ সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা ছিলেন। সংসদ সচিবালয় থেকে জানানোহয়েছে, সংসদ ভবন এলাকায় ঔষধি, বনজ, ফলদসহ মোট ২৯টিপ্রজাতির গাছ লাগানো হচ্ছে।