ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট এবং প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) চেয়ারম্যান মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে তিনি ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদের জন্য আবেদন জানাবেন। শুক্রবার জাতির উদ্দেশে দেয়া ত্রিশ মিনিটের এক টেলিভিশন ভাষণে প্রস্তাব উত্থাপনের বিষয়ে তিনি দৃঢ়ভাবে এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

 রামাল্লাতে দেয়া এ ভাষণে তিনি বলেছেন, জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদের মর্যাদা পাওয়া ফিলিস্তিনি নাগরিকদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার। তিনি বলেন, আমরা নিরাপত্তা পরিষদে যাচ্ছি। জাতিসংঘে আমাদের পূর্ণ সদস্যপদ প্রয়োজন। আমাদের একটি রাষ্ট্র প্রয়োজন এবং জাতিসংঘেও একটি সিট প্রয়োজন।  আব্বাস বলেন, ২৩শে সেপ্টেম্বর সাধারণ পরিষদে বক্তব্য দেয়ার পরই তিনি ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির জন্য আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানাবেন। আব্বাস বলেন, ১২০টির বেশি দেশ ইতিমধ্যেই ফিলিস্তিনের উদ্যোগকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তিনি এ ভাষণে সাধারণ পরিষদে ২০১০ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার দেয়া ভাষণের কথা উল্লেখ করেন। তখন ভাষণে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেছিলেন, আগামী বছরের মধ্যেই ফিলিস্তিন রাষ্ট্র হিসেবে জাতিসংঘে যোগ দেবে। পূর্ণ স্বীকৃতির জন্য সাধারণ পরিষদের দুই তৃতীয়াংশ সমর্থন প্রয়োজন হলেও এতে নিরাপত্তা পরিষদের পূর্ণ সমর্থন দরকার হয়। নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যেই এতে ভেটো দেয়ার কথা জানিয়েছে। আব্বাস অবশ্য তার বক্তব্যে এ ভেটোর ব্যাপারে কিছুই বলেননি। ইসরাইলের সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি তিনি একে একটি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ বলে উল্লেখ কনে। ইসরাইলের সঙ্গে ফিলিস্তিনের শান্তি আলোচনা গত সেপ্টেম্বরেই ভেঙে পড়েছে। এ ব্যাপারে আব্বাস বলেন, আমরা আন্তরিকভাবে শান্তি আলোচনায় যোগ দিতে চাই। কিন্তু আমরা ইসরাইল সরকারের পক্ষ থেকে কেবল সময় ক্ষেপণ ছাড়া আর কিছুই পাইনি। অনেক ফিলিস্তিনিই মনে করেন, জাতিসংঘের কাছে পূর্ণ সদস্যপদ চাওয়ার এ উদ্যোগ তাদের দৈনন্দিন জীবনে কোন প্রভাবই ফেলবে না। আব্বাসও এ সমালোচনা স্বীকার করে বলেন, আমরা সেখানে যাচ্ছি স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার জন্য। অন্য বিষয়গুলো নিয়ে আমরা পরে সমঝোতায় বসবো। আব্বাসের ভাষণ শেষে ইসরাইলের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, জাতিসংঘে যাওয়ার মাধ্যমে ফিলিস্তিন সরাসরি ইসরাইলের সঙ্গে আলোচনাকে উপেক্ষা করছে। এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের বক্তব্য হচ্ছে, সরাসরি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই কেবল ফিলিস্তিন রাষ্ট্র বাস্তবায়ন সম্ভব।