আফগান কর্মকর্তারা বলছেন – প্রচন্ড শক্তির এক আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরনে দেশের সাবেক প্রেসিডেণ্ট বুরহানূদ্দীন রাব্বানী নিহত হয়েছেন কাবুলে । মঙ্গলবার রাতে রাজধানী কাবুলে মিঈরাব্বানীর বাড়ির বাইরে ঐ বিস্ফোরণ ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শিরা জানিয়েছেন। এতে প্রেসিডেণ্ট হামিদ কারযাই-র অন্যতম পরামর্শক মাসূদ তানেকযাই আহত হয়েছেন ।

প্রয়াত বুরহানূদ্দীন রাব্বানী কড়া নিরাপত্তায় সূরক্ষিত কাবুলের গ্রীন যোন এলাকায় অন্যান্য সরকারী ভবন এবং যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কাছাকাছি বাস করছিলেন ।আফগানিস্তানের শীর্ষ শান্তি পরিষদের প্রধান, সাবেক প্রেসিডেন্ট বুরহানউদ্দিন রাব্বানিকে তালিবানের সঙ্গে দশ বছরের যুদ্ধের একটা রাজনৈতিক সমাধান বার করার প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো। আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই ২০১০ সালের অক্টোবারে পরিষদ নিয়োগ করেন। ৬৮ সদস্যের ওই পরিষদে আছেন উপজাতীয় শীর্ষ নেতারা, ধর্মীয় নেতারা, এবং রাজনীতিকরা। এই পরিষদের লক্ষ্য ছিল বিদ্রোহীদের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ করা। ওই সকল বিদ্রোহী অস্ত্র  আত্মসমর্পন করে সরকারে যোগ দিতে আগ্রহী ছিলেন। আফগানিস্তানের উত্তর পুর্বাঞ্চলে বাদাকশান প্রদেশে ১৯৪০ সালে বুরহানউদ্দিন রাব্বানি জন্মগ্রহন করেন। তিনি কাবুলে এবং পরে কায়রোর আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন।

১৯৭১ সালে ইসলামপন্থী একটি দল জামিয়াত-ই-ইসলামীর নেতৃত্বের নিয়ন্ত্রন নেন তিনি। ওই দলটি পরে মুজাহেদিন গ্রুপগুলোর একটি প্রতিষ্ঠা করে। ওই মুজাহেদিন গ্রুপগুলো ১৯৭৯ সালে সোভিয়েট ইউনিয়ন যখন আফগানিস্তানে আক্রমণ চালায় তখন তাদের বিরুদ্ধে লড়েছে।১৯৯২ সালে মি রাব্বানি মুজাহেদিন কোয়ালিশন সরকারের প্রেসিডেন্ট হন।  মুজাহেদিন গ্রুপগুলোতে ক্ষমতার দ্বন্দের কারণে যে সংঘাত শুরু হয় তাতে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়। মি রাব্বানির প্রেসিডেন্ট পদের দায়িত্ব শেষ হয় ১৯৯৬ সালে।

তিনি একজন তাজিক এবং পরে উত্তরাঞ্চলের মিত্র জোটের প্রধান হন। ওই জোট আন্তর্জাতিক বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয় এবং ২০০১ সালে তালেবানকে ক্ষমতাচ্যুত করে। মি রাব্বানি মঙ্গলবার আফগানিস্তানের রাজধানীতে এক আত্মঘাতী আক্রমনে নিহত হন।