গ্রামীণ ব্যাংকে ব্যাবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নিয়োগের জন্য ‘ইচ্ছাপত্র’ (লেটার অব ইনটেন্ট) আহ্বান করবে সরকার।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
মুহিত বলেন, “গ্রামীণ ব্যাংকে এমডি নিয়োগের জন্য ইন্টারন্যাশনাল লেটার অব ইনটেন্ট (ইচ্ছাপত্র) আহ্বানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। খুব শিগগিরই এটা আহ্বান করা হবে।”
গত বছর প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ ইউনূসকে সরকার অব্যাহতি দেওয়ার পর থেকে উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান ওই দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।
ইউনূসকে অব্যাহতি দেওয়া এবং গ্রামীণ ব্যাংক আইন সংশোধন নিয়ে দেশে ও দেশের বাইরেও সমালোচনায় রয়েছে সরকার।
অর্থমন্ত্রী বলেন, “আসন্ন ঈদের আনন্দের মধ্যেও আমি পদ্মা সেতু ও গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে অস্বস্তিতে আছি।”
সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে মজিনা সাংবাদিকদের বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগের ক্ষমতা এর সদস্যদের হাতেই থাকবে বলে আশ্বাস পেয়েছেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, “সোমবার মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে আমি বলেছি, গ্রামীণ ব্যাংক সরকার দখল করেছে বলে ড. ইউনূস যা বলে বেড়াচ্ছেন, তা সম্পূর্ণ ভুয়া।”
“মার্কিন রাষ্ট্রদূত দুটি বিষয়ে কথা বলেছেন। প্রথমত, ঋণগ্রহীতারাই এমডি নির্বাচন করবেন এবং দ্বিতীয়ত গ্রামীণ ব্যাংকের এমডিকে একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হতে হবে,” বলেন তিনি।
গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগের বিধি সংশোধনের যৌক্তিকতা তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, “এটা ঠিক যে গত দেড় বছরে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। ঋণ গ্রহীতারা ড. ইউনূসের নাম প্রস্তাব করায় সিলেকশন প্রক্রিয়ায় কেবল তার নামই চলে আসে। কিন্তু তিনি তো আর এমডি হতে পারেন না।”
বয়সসীমা অতিক্রান্ত হওয়ার কারণ দেখিয়ে ইউনূসকে অব্যাহতি দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে হেরে ইউনূস নিজেই পদত্যাগ করেন।
মুহিত বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের বিধান অনুযায়ী ব্যাংকের এমডি মনোনয়ন দেবে পরিচালনা বোর্ড। তবে এক্ষেত্রে চেয়ারম্যানের সুপারিশ লাগবে।
ইউনূস বলে আসছেন, সরকার মনোনীত চেয়ারম্যানের মাধ্যমে নিয়োগের মাধ্যমে গ্রামীণ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ এর সদস্যদের কাছ থেকে ‘কেড়ে’ নেওয়া হচ্ছে।
গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব নেওয়ার মতো উপযুক্ত ব্যক্তি দেশে-বিদেশে রয়েছে মন্তব্য করে মুহিত বলেন, অনেক বিদেশি বিশেষজ্ঞ এরই মধ্যে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের এক সদস্য ঋণগ্রহীতাদের মাধ্যমে ব্যবস্থাপক নির্বাচনের যে দাবি তুলেছেন, সে বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, “অতটা সচেতনতা বা সক্ষমতা এখনো তাদের হয়নি। তারা মনে করেন, ড. ইউনূস থাকলেই সব ঠিক। কিন্তু বর্তমানে নতুন ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে এ প্রবণতা তেমন নেই।”