অলিম্পিক গেমসের এবারের আসরের সাঁতারে সহজেই দ্বিতীয়বারের মতো স্বর্ণ জিতে নিলেন ১৬ বছরের কিশোরী ইয়ে সিয়েন। ৪০০ মিটারের সাঁতার প্রতিযোগিতায় ছেলেদের চেয়েও তার গতি অনেক বেশি ছিল। ক্ষিপ্রগতির এ কিশোরী জানান, তার সাঁতারু জীবনের শ্রমসাধনার কাহিনী।
অলিম্পিকের ভবিষ্যত্ স্বর্ণজয়ী হিসেবে ছেলেমেয়েদের গড়ে তোলার জন্য চীনজুড়ে রয়েছে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। নিয়মানুযায়ী বাচ্চাদের ছয় থেকে সাত বছরের মধ্যে সেসব স্কুলে ভর্তি করে দিতে হয়। এরপর চলে তাদের দক্ষ খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে তোলার পালা। মাত্র সাত বছর বয়সে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে এনে এমন একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ইয়ে সিয়েনকে ভর্তি করে দেন তার বাবা-মা। ইয়ে সিয়েন জানান, সেখানে তার পরিচয় ছিল সাঁতারু-১৩৭। প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নামের চেয়ে এই পরিচয়েই তাকে বেশি চিনতেন। অবশ্য এমনটা সব প্রশিক্ষণার্থীর জন্যই প্রযোজ্য। ইয়ে সিয়েন জানান, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলত সাঁতার প্রশিক্ষণ। কখনও কখনও তা রাত পর্যন্ত গড়াত। কত ঘণ্টা যে তাকে প্রশিক্ষণ নিতে হতো সে হিসাব রাখা তাদের পক্ষে সম্ভবও ছিল না। শুধু জানতেন যতক্ষণ জেগে আছেন ততক্ষণ প্রশিক্ষণ নিতে হবে। প্রশিক্ষণের সময় মাঝে মধ্যে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে করা হতো নির্মম আচরণ। আর শারীরিক পরিশ্রমের সঙ্গে চলে প্রচুর আমিষ ও শক্তিবর্ধক খাবার খাওয়া। ইনজেকশনের মাধ্যমে ডি ভিটামিনযুক্ত জৈবিক যৌগিক পদার্থও তাদের শরীরে প্রয়োগ করা হতো। এতে শিশুদের দৈহিক বৃদ্ধি ও শক্তি বাড়ে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। চীনজুড়ে এ ধরনের অন্তত তিন হাজার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। স্বল্প আয়ের মানুষরাও ছেলেমেয়েদের স্কুলের খরচ বন্ধ করে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে ভর্তি করে দেন। চীনের ভবিষ্যত্ প্রতিনিধি হিসেবে সন্তানকে গড়ে তুলতে বাবা-মা নিজেদের সর্বস্ব ব্যয় করেন। তাদের মূল লক্ষ্যই থাকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্বর্ণ জয়। আর প্রতিবছর দেশটি সেদিকেই এগিয়ে চলেছে। ডেইলি মেইল।