জাতীয় মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ হলেও ফিফার নির্দেশনায় টুর্নামেন্টটা বদলে হয়েছে সুপার লিগ। কাল তিন ভেন্যুতে বল মাঠে নামতে যাওয়া জাতীয় মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপের গায়ে নতুন মোড়ক সাঁটা হয়েছে। নতুনত্বের টুর্নামেন্টে বেড়েছে দল, বাড়ছে মেয়েদের সুযোগ-সুবিধাও, কাল বাফুফে ভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মহিলা উইং চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বাচ্চু।

মেয়েদের উৎসাহিত করতে প্রাইজমানি (চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দল ৫০ হাজার টাকা ও ৩০ হাজার টাকা, সেরা ফুটবলার ও সর্বোচ্চ গোলদাতা ৫ হাজার টাকা করে) ছাড়াও মেয়েদের যাতায়াত ভাড়া এবং দৈনিক ২২৫ টাকা দিচ্ছে মহিলা উইং। প্রতিটি দল অ্যাপিরিয়েন্সমানি পাবে ১০ হাজার টাকা করে। সাত আয়োজক ভেন্যু খরচ পাবে ৩০ হাজার টাকা করে।

এবারই প্রথম মেয়েদের রেজিস্ট্রেশন করে খেলতে হবে। ৩৮ লাখ টাকা বাজেটের টুর্নামেন্টে ১০ লাখ টাকা দিচ্ছে টাইটেল স্পন্সর কেএফসি। ফিফার অনুদান ৩৩ হাজার ডলার। ফিফার নির্দেশনা মানতে টুর্নামেন্টের নাম ও ফরমেটে পরিবর্তন হয়েছে। জাতীয় মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপ হয়েছে সুপার লিগ। বাছাইপর্ব টপকে আসা সাতটি ও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আনসারকে নিয়ে মূল টুর্নামেন্ট ‘সুপার লিগ’ হবে সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে। চূড়ান্ত পর্বের সেরা চার দল খেলবে সুপার ফোরে।

মোড়ক পাল্টালেও বাড়ছে মহিলা ফুটবলের কলেবর। গতবছর জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে খেলেছিল ২৬টি দল। এবার বাছাইপর্ব (৩৬টি) ও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আনসারকে নিয়ে অংশগ্রহণকারী দল ৩৭টি। আনকোরা ১৩টি। খাগড়াছড়ি, কুষ্টিয়া ও জয়পুরহাটে খেলা শুরু হবে কাল। পরশু বল মাঠে নামবে নীলফামারী ও ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর সিলেট ও ঢাকায় সেটা হবে ১৪ জুলাই। তবে মোট দল হতে পারত ৪১টি! মেয়েদের স্কুলের পরীক্ষা, বন্যার অজুহাতে শেষ মুহূর্তে টুর্নামেন্ট থেকে নাম প্রত্যাহার করছে কুমিল্লা, মুন্সীগঞ্জ, মেহেরপুর ও কক্সবাজার।

নেপথ্য কারণ, ফেডারেশনের অভ্যন্তরীণ কোন্দল! বাফুফের মহিলা কমিটিকে অকার্যকর প্রমাণ করতে ফুটবল ধ্বংসের পথ বেছে নিয়েছে জেলা চারটির কর্তারা। তারা নাকি আরো কিছু জেলাকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। কিন্তু বাফুফে সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন কঠোর হওয়ায় পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। কো-চেয়ারম্যান মাহফুজা আকতার কিরন জানান, ‘মহিলা ফুটবল কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি না, জাতীয় স্বার্থ। ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের প্রভাব মহিলা ফুটবলে পড়লে ক্ষতি হবে দেশের। বাফুফেতে অভ্যন্তরীণ কোন্দল থাকলেও গত বছর মেয়েদের করপোরেট লিগ, মহানগরী লিগ, সুপার কাপ করেছি। এশিয়ান মানে পেঁৗছানোর সম্ভাবনা থাকায় এবারো সবার সহযোগিতা চাই।’

তাই তো মহিলা ফুটবল উন্নয়নে বাফুফের পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন কেএফসি প্রতিনিধি এরিয়া ম্যানেজার তানভীর কায়সার। বলেছেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে দেশে জোরালভাবে মহিলা ফুটবল চলছে। মহিলা ফুটবল উন্নয়নে দুই পক্ষের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনাও হয়েছে।’ এদেশে মহিলা ফুটবল চর্চা ও বাণিজ্যিক সুযোগ-সুবিধা পর্যবেক্ষণে দিন চারেকের মধ্যে ঢাকায় আসবেন ফিফা প্রতিনিধি বেলিন্ডা উইলসন। গত বছর সুপার লিগের সময় ঢাকায় থাকা ফিফা প্রতিনিধির সুপারিশেই কিন্তু ৩৩ হাজার ডলার প্রাপ্তি বাফুফের! তাই বাংলাদেশে চোখ তো থাকবেই ফিফার।