অলিম্পিক স্টেডিয়াম প্রকম্পিত হচ্ছিলো দর্শকদের উল্লাস ধ্বনিতে। ঘোষক গলা ফাটিয়ে জানাচ্ছিলেন বিশ্বরেকর্ড দিয়ে শেষ হলো অলিম্পিক অ্যাথলেটিক্স। যে দেশ স্বর্ণপদক জিতেছে সেই জ্যামাইকার নাম না বলে ঘোষক প্রসংসায় ভাসাচ্ছিলেন উসাইন বোল্টকে।

বোল্ট স্বয়ং একটি দেশ। অলিম্পিকের দ্রুততম মানবের কথা বললে সবার চোখে ভেসে উঠে জ্যামাইকার মানচিত্র। আবার জ্যামাইকা বললে চোখের সামনে এসে হাজির হয় বোল্টের ছবি। বাতাসের গতিতে যে ছেলেটি দৌড়াতে পারেন। যার পায়ের কাছে এসে লুটোপুটি খায় রেকর্ড।

আন্তর্জাতিক অ্যামেচার অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের প্রসংসা না করলেই নয়। শেষ আকর্ষণ হিসেবে তারা পুরুষদের ৪x১০০ মিটার রিলে রেখে দিয়েছিলেন। ৮০ হাজার দর্শক দারুণ অভিজ্ঞতা নিয়ে বাড়ি ফিরতে পরলেন বোল্টের গতি দেখে।

অ্যাথলেটিক্সের জীবন্ত কিংবদন্তি বেইজিংয়ের পর লন্ডনেও ১০০, ২০০ ও ৪x১০০ মিটার রিলেতে স্বর্ণপদক জিতলেন। পৃথিবী নামক গ্রহে বোল্টের আগে কেউ দুই অলিম্পিকে এই তিন ইভেন্টে স্বর্ণ জেতেননি। তিনি এখন কিংবদন্তিদের কিংবদন্তি। ২৬তম জন্মদিনের আগে জ্যামাইকান বিদ্যুৎ অলিম্পিক থেকে অর্জন করলেন ছয়টি সোনার পদক। অতিমানবীয় ব্যাপারস্যাপার না হলে এটা সম্ভব হতো না।  

৩৬.৮৪ সেকেন্ডের বিশ্বরেকর্ডের পেছনে ইয়োহান ব্লেক এবং উসাইন বোল্টের কৃতিত্ব অসামান্য। আমেরিকার নেস্তা কার্টার ও মাইকেল ফ্রেটার প্রথম ২০০ মিটার দারুণ ভাবে এগিয়ে দিয়েছিলেন তাদের দলকে। কিন্তু ১০০ ও ২০০ মিটারে রৌপ্য জয়ী ব্লেক সতীর্থ বোল্টের হাতে ব্যাটন তুলে দেন সমতা এনে। দ্রুততম মানব রায়ান বেইলিকে পেছনে ফেলে শেষ করলেন বোল্ট। ভলেন্টিয়ারের হাতে ব্যাটন দিয়ে জয় উদযাপন করতে লাগলেন গতিমানব। সেকি আনন্দ। বোল্টের চেয়েও দর্শকরা বেশি উপভোগ করলেন জয়টাকে। দর্শকদের উচ্ছ্বাস দেখে যেকারো মনে হবে তারা এটাই দেখতে চেয়েছিলেন।