কেউ না কেউ একদিন না একদিন শচিন টেন্ডুলকারের একশো সেঞ্চুরিও রেকর্ডও ভাঙবে। আর সেটা না হলে বুঝতে হবে মানব সভ্যতা পিছিয়ে পড়ছে। বক্তা আর কেউ নয়, কপিল দেবসোজাসাপ্টা কথা বলায় ক্রিকেটবিশ্বে যাঁর তুলনা পাওয়া কঠিন। “আমাদের সময় আমরা ভাবতাম সুনীল গাভাস্করের চেয়ে বড় ক্রিকেটার আর কেউ আসবে না। তার পরই শচিনের আবির্ভাব। আমি নিশ্চিত, ভবিষ্যতে শচিনের চেয়েও ভাল ক্রিকেটার আসবে। এবং শচিনের রেকর্ড ভাঙবে। সেটা না হলে মনে করতে হবে মানব সভ্যতা পিছিয়ে পড়ছে,” আশা ভারতের সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারের।
ভারতীয় বোর্ড তাঁকে ব্রাত্য করে রাখলে কী হবে, নতুন প্রজন্মের সামনে দৃষ্টান্ত তুলে ধরার ব্যাপারে ক্লান্তিহীন কপিল। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আমন্ত্রণে রবিবার কলকাতা আসা আর সেখানে শচিন এবং বিনোদ কাম্বলির তুলনা টেনে খুব সহজ ভাষায় কপিল বোঝালেন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রসায়ন। সমান প্রতিভা থাকলেও একজনের সঙ্গে আর একজনের তফাতটা ঠিক কোথায়। “শচিন আর কাম্বলি যখন একসঙ্গে ওদের কেরিয়ার শুরু করেছিল, তখন সবাই বলেছিল, ওরা দু’জনেই অসাধারণ প্রতিভাবান। কিন্তু এখন কোথায় শচিন, কোথায় কাম্বলি? এর থেকেই বোঝা যায় শৃঙ্খলার গুরুত্ব কতটা। শৃঙ্খলা না থাকলে, নিজেকে বুঝতে শেখার ক্ষমতা না থাকলে কেউ সচিন তেন্ডুলকর হয় না,” বলে দিচ্ছেন তিরাশির বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক।
আড্ডার মেজাজে উঠে এল তাঁর ছোটবেলার কথা। বরাবরের স্পষ্টভাষী কপিলের স্বীকারোক্তি, “ছাত্র হিসেবে আমি খুব খারাপ ছিলাম। আমার শিক্ষা বলতে শুধুই ক্রিকেট। পরে বুঝতে পেরেছি মন দিয়ে পড়াশোনা করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ!” নিজের শৈশব নিয়ে স্মৃতিচারণে জানাচ্ছেন, নিজের বাবাকে ভয়ে কোনও দিন কোনও প্রশ্ন করতে পারেননি। অথচ এখন তাঁর মেয়েই তাঁর সবচেয়ে ভাল বন্ধু। ক্রিকেটজীবনে খারাপ সময়ের মোকাবিলা কী ভাবে করতেন? “সব সময় ইতিবাচক ভাবতাম। নিজেকে বলতাম, রোজ রোজ তো শূন্য রানে আউট হব না! পরের দিনটা নিশ্চয়ই ভাল যাবে।” টানা সাফল্যেও কী করে মাটিতে পা রেখে চলার টোটকা? “আমি একটা জিনিসে বিশ্বাস করি। যদি তুমি সেঞ্চুরি করো, তা হলে ওই একশোটা রান ব্যাঙ্কে রেখে পরের দিন আবার শূন্য থেকে শুরু করো! তা হলেই আর আত্মতুষ্টি আসবে না,” বলছেন কপিল।