বয়স ২৭। একজন ক্রীড়াবিদের জন্য সময়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ফেলপসের ক্ষেত্রে তা ব্যতিক্রম। ২৭ বছরেই ফেলপসের শেষ! সর্বকালের সেরা সাঁতারুর খেতাবটা তো আগে থেকেই গায়ে লেগে আছে। ২৭ বছর বয়সেই এবার পেলেন অলিম্পিকের সর্বকালের সেরা অ্যাথলেটের খেতাবও। ১৮ স্বর্ণসহ ২২ অলিম্পিক পদক! বিশ্ব
সাঁতারকে হিমালয় সমান দেওয়ার পর আর কিইবা বাকি ছিল দেওয়ার? শনিবার রাতে সাফল্যের হিমালয় ছোঁয়ার পর সাঁতারকে বিদায় বললেন মাইকেল ফেলপস।
বিশ্ব কাঁপানোর বার্তাটা তিনি দিয়ে রেখেছিলন শৈশবেই। বয়সভিত্তিক সাঁতারে চ্যাম্পিয়ন হয়ে আমেরিকানদের যখন তাক লাগিয়ে দিলেন, তখন ফেলপসের বয়স মাত্র ১০। ১১ বছর বয়সে এলেন বিখ্যাত কোচ বব বোম্যানের পরিচর্যায়। মাত্র ১৫ বছর বয়সে অংশ নিলেন ২০০০ সিডনি অলিম্পিকে। ২০০ মিটার বাটার ফ্লাইয়ে সেবার চতুর্থ স্থান নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল তরুণ ফেলপসকে। কিন্তু এরপর থেকেই উত্থান শুরু হয় তার। ২০০৩-এ বিশ্ব সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপে চার স্বর্ণ জিতে চমক দেখান তিনি। আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০০৪ এথেন্স অলিম্পিকে জিতলেন ছয় স্বর্ণ, দুই ব্রোঞ্জ। সেই সাফল্য অব্যাহত রাখলেন পরের বছর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপেও। পাঁচ স্বর্ণ জিতলেন ২০০৫-এর এই আসর থেকে। বাজিমাত করলেন ২০০৭-এর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সাতটি ইভেন্টের সব কটিতে স্বর্ণ জিতে। এক অলিম্পিকে সর্বোচ্চ সাঁত স্বর্ণ জিতে ১৯৭২ সালে রেকর্ড গড়েছিলেন মার্কিন কিংবদন্তি সাঁতারু মার্ক স্পিজ। এথেন্সে মার্কের গড়া রেকর্ড ভাঙতে না পারলেও বেইজিং অলিম্পিকে আট স্বর্ণ জিতে ছাড়িয়ে যান তাকে। গড়েন নতুন ইতিহাস। আর লন্ডনে নিজের শেষ অলিম্পিকে ছাড়িয়ে গেলেন সবাইকে এবং এমনকি নিজেকেও। ভাঙলেন সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের জিমন্যাস্ট লারিসা নাতালিনার অলিম্পিকে গড়া সর্বোচ্চ ১৮ পদকের রেকর্ড। গড়লেন আরও নতুন রেকর্ড। পরপর তিন অলিম্পিকের এককে স্বর্ণপদক জয়ের রেকর্ড করলেন একবার নয়, দু’বার।
এতটা যার কীর্তি, হিমালয় সমান যার অর্জন, তার তো সন্তুষ্ট হওয়ারই কথা। সন্তুষ্ট মাইকেল ফেলপসও। শনিবার রাতে ক্যারিয়ারের শেষ স্বর্ণপদক জেতার পর সে কথাই বললেন ফেলপস-‘আমি যা করতে চেয়েছিলাম, তার সব কিছুই করতে পেরেছি। আমি তৃপ্ত।’