রান্নার উপাদান হিসেবে হলুদ আমাদের এই উপমহাদেশে অত্যাবশ্যকীয় একটি উপাদান। রান্নার রং ও গন্ধে হলুদের কোনো জুড়ি নেই। যদিও তরকারিতে হলুদের পরিমিত ব্যবহার করা জরুরি, নইলে হলদেটে গন্ধে তরকারি খাবার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। শুধু মসলা হিসেবে সাধারণ ব্যবহার নয়, গবেষকরা হলুদের শক্তিশালী ঔষধি গুণ বর্ণনা করেছেন। নিশ্চিত না হলেও দৈনিক ৪ থেকে ১০ গ্রাম হলুদ গ্রহণেই এই ফল পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তাই গবেষকরা হলুদের কার্যকর উপাদানকে ব্যবহারের জন্য তরল বা টিংচার, পেস্ট/মলম ও ট্যাবলেট হিসেবে বাজারজাত করার কথা ভাবছেন।
ক্যানসার প্রতিরোধে হলুদ
আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটির মতে, হলুদে আছে শক্তিশালী সারকুমিন নামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। গবেষকরা বলেন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে। হলুদের সারকুমিন নামক উপাদান মুখগহ্বর, খাদ্যনালি, অন্ত্র, পাকস্থলী, ব্রেস্ট ও ত্বকের ক্যানসার প্রতিরোধে ক্যানসার সৃষ্টিকারী এনজাইম তৈরিতে বাধা দেয় বলে প্রমাণ মিলেছে।
পেটের পীড়ায়, কাটাছেঁড়ায় হলুদ
সাধারণ আমাশয়ে কিংবা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম বা পুরনো আমাশয়ে সামান্য তেলে হলুদ পেঁয়াজ দিয়ে ভেজে ভাত খেলে উপকার পাওয়া যায়। কারণ হলুদের রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক ক্ষমতা, যা প্যারাসাইট এবং ব্যাকটেরিয়াজনিত বিষক্রিয় উপাদান বা টক্সিনকে প্রতিহত করতে পারে। ফলে সেরে ওঠে অন্ত্রের প্রদাহ। এই কারণে ত্বকের কোথাও কেটে গেলেও রক্ত বন্ধ করতে ক্ষতস্থানে যে হলুদের ব্যবহার দেখা যায়, তাও যথার্থ বলে জানিয়েছে আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটি। এছাড়া পেটের আলসার বা ক্ষত সারাতেও হলুদ উপকারী। যারা নিয়মিত ব্যথানাশক ওষুধ খান তাদের পেটের ক্ষত সারাতে হলুদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আরও কিছু রোগে
গবেষণায় জানা গেছে, হলুদ আলঝেইমার্স বা স্মৃতিভ্রষ্ট রোগের দারুণ প্রতিষেধক। সেই সঙ্গে যারা শরীরের বিভিন্ন হাড়ের সন্ধিস্থলের ব্যথা কিংবা পিরিয়ডের ব্যথায় ভুগছেন, তাদের জন্য সুখবর হল হলুদের আছে এ ব্যথা উপশমকারী ক্ষমতা। নিয়মিত যারা খাবারে সঠিক উপায়ে হলুদের ব্যবহার করেন তারা অবশ্যই উপকৃত হবেন।