বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের-১২ (বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমানের অপসারণ এবং গ্রামবাসীর নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে জেলার আখাউড়ায় ট্রেন অবরোধ করেছেন গ্রামবাসী।

তারা রোববার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী কালনী এক্সপ্রেস অবরোধ করে রাখে।

পরে জনপ্রতিনিধিদের মধ্যস্থতায় অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। এসময় দাবি আদায়ে ২৪ ঘণ্টার সময় বেধে দেওয়া হয়।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ৩১ জুলাই রাতে আখাউড়ার উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের রাজাপুর গ্রামের কামাল চৌধুরীকে আটক করতে তার বাড়িতে যান বিজিবি সদস্যরা। এসময় গ্রামবাসীর সঙ্গে বিজিবি সদস্যদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

পরে কামালকে রেখেই তড়িঘড়ি ঘটনাস্থল ত্যাগ করে আজমপুর বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা। পরের দিন সন্ধ্যায় হাতকড়াসহ মাদক ব্যবসায়ীকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে দুই ইউপি সদস্যসহ কয়েক শ’ গ্রামবাসীর নামে আখাউড়া থানায় মামলা দায়ের করে বিজিবি।

এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে উত্তর ইউনিয়নের জনগণ। রোববার সকালে বিক্ষুব্ধ জনগণ মিছিল এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে স্বারকলিপি দেওয়ার ঘোষণা দেন।

এদিকে, এ খবরে সকাল থেকেই উত্তর ইউনিয়ন থেকে আখাউড়া পর্যন্ত বিভিন্নস্থানে হাতকড়া নিয়ে অবস্থান নেয় বিজিবি সদস্যা। সিএনজি চালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে তল্লাশি শুরু করে তারা।

এ অবস্থায় কয়েক শ’ বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ওই ইউনিয়নের আজমপুর রেলস্টেশনে ঢাকাগামী আন্তঃনগর কালনী এক্সপ্রেস অবরোধ করে রাখেন। খবর পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ বোরহান উদ্দিন, পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল, উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া স্বপন ঘটনাস্থলে ছুটে যান। এসময় উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে স্বারকলিপি দেন গ্রামবাসী।

উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া স্বপন জানান, বিজিবি প্রায়ই মিথ্যা মামলা দিয়ে সাধারণ জনগণকে হয়রানি করে। এ বিষয়ে কথা বলতে ক্যাম্পে গেলে তাকে সেখানে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

তিনি আরও বলেন, ১২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমানের নির্দেশেই আজমপুর ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা এসব করছে। শুধুমাত্র সীমান্ত এলাকার মানুষ হওয়ায় এমন নির্যাতন চলতে পারে না।

তিনি আরও জানান, জনগণের কাছ থেকে তারা ৩ দিনের সময় চেয়ে নিয়েছেন। এরমধ্যে দাবি আদায় না হলে আখাউড়াবাসীকে নিয়ে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করা হবে।

উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ বোরহান উদ্দিন জানান, বিজিবি ও গ্রামবাসীর মধ্যে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দরকার। কারণ, বিজিবির ধারাবাহিক নির্যাতনের প্রতিবাদেই আজ গণবিস্ফোরণ ঘটেছে। পাশাপশি বিজিবির অধিনায়ক লে.কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমানের অপসারণ দাবি করেন তিনি।

১২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, তারা বিষয়টি সমাধানে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে গ্রামবাসীকে বলা হয়েছে ছিনিয়ে নেওয়া হাতকড়া ফেরত দিতে।

হাতকড়া ফেরত দিলে মামলা প্রত্যাহারের ব্যপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।