আজ বহুল প্রতীক্ষিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ । সিটি করপোরেশন গঠিত হওয়ার পর এটাই প্রথম ভোট। সকাল ৮টায় শুরু হয়ে টানা ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। এদিকে সেনাবাহিনী মোতায়েন না হলে র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মাঠে নেমেছে। নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

সেনা মোতায়েন না হওয়ায় ভোটারদের মধ্যে রয়েছে শঙ্কা ও উদ্বেগ। ভোটকেন্দ্রে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে কি না এই নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভোটাররা । এত দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগের মধ্যেও ভোটারদের মধ্যে রয়েছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও আনন্দ। এনসিসি নির্বাচন উপলক্ষে আজ নারায়ণগঞ্জ নগরীতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। প্রার্থীর পাশাপাশি দেশবাসীর নজর এই নির্বাচনকে ঘিরে। সবার মুখে মুখে ঘুরেফিরে একটাই প্রশ্ন_ কে হতে যাচ্ছেন নবগঠিত সিটির নগরপিতা, আগামী ৫ বছরের জন্য।

এদিকে হেভিওয়েট তিন মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, শামীম ওসমান ও তৈমূর আলম খন্দকার প্রত্যেকেই বিপুল ভোটে বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। শামীম ওসমান তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, কোনো ষড়যন্ত্র না হলে আবশ্যই আমি বিজয়ী হব। অপর প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, জনগণ ভোট দিয়ে আমাকে অবশ্যই বিজয় করবে। এর জন্য ভোটারদের কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। তৈমূর আলম বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জয় সুনিশ্চিত। ইনশাল্লাহ জয় নিয়েই ঘরে ফিরব।

রিটার্নিং অফিসার বিশ্বাস লুৎফর রহমান বলেছেন, হয় সুষ্ঠু নির্বাচন, নয় তো নির্বাচন স্থগিত। র‌্যাব কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, ভীতি ছাড়াই আপনারা (ভোটার) ভোটকেন্দ্রে আসুন। নির্বাচনের সব প্রস্ততি এরই মধ্যে শেষ করেছে ইসি। গত বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই ব্যালট বাক্সসহ ভোটের বিভিন্ন উপকরণ কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে প্যাড, সিল ও পেন্সিল রয়েছে। যে পদ্ধতিতে ভোট নিয়ে শুরু থেকেই বিতকর্, আলোচিত সেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনও (ইভিএম) কেন্দ্রে পাঠাতে দেখা গেছে। বুধবার মধ্যরাতের পর ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জে পেঁৗছে এসব ইভিএম।

২৭টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রার্থীর সংখ্যা ২৫৬ জন, ৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী ৫৮ জন। কেন্দ্রগুলোতে বুধবার ব্যালট পেপার, সিল, গালা, অমোচনীয় কলমসহ প্রয়োজনী নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও দুপুরের পর কেন্দ্রগুলোতে অবস্থান নেন। নগরীর গুত্বপূর্ণ স্থানে র‌্যাব ও পুলিশের সমন্বয়ে চেক পয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে।

এ নির্বাচন অনুষ্ঠানের যাবতীয় প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠে সেনাবাহিনী না থাকলেও রয়েছে অতিরিক্ত র‌্যাব, পুলিশ, কোস্টগার্ড, আনসার ও ভিডিপির প্রায় সাড়ে ৫ হাজার সদস্য।  নারায়ণগঞ্জের ২৭টি ওয়ার্ডের ১৬৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের সংখ্যা ১২০টি। যে কোনো নির্বাচনের মধ্যে ওয়ার্ড সংখ্যার বিবেচনায় সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র এই সিটিতে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে সিসি টিভি বসানোর কথা রয়েছে। ১৬৩টি ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করবেন ১৬৩ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ১ হাজার ২১৭টি ভোটকক্ষে ১ হাজার ২১৭ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং ২ হাজার ৪৩৪ জন পোলিং অফিসার।