গতকাল শুক্রবার রাঙ্গামাটিতে পার্বত্য জেলার হেডম্যানদের সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও উত্তরণ বিষয়ক ২ দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এক টেলিকনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান সরকারই পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ফলে এই চুক্তি বাস্তবায়নেও এই সরকার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এই সরকারের আমলেই চুক্তি বাস্তবায়িত করবেন জানিয়ে চুক্তির বিভিন্ন অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সময়েই ভূমি কমিশন কার্যকরভাবে কাজ শুরু করেছে। পার্বত্য এলাকার মানুষের ভূমি অধিকার নিশ্চিত করার জন্যই ভূমি কমিশন গঠন করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে হেডম্যানদের ভিডিও কনফারেন্স হওয়ার কথা থাকলেও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রায় ২ ঘণ্টা পর টেলিকনফারেন্সে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এই কমিশনকে সহযোগিতা করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
টেলিকনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও জেলা পরিষদের কাছে মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন দফতর হস্তান্তরের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। হেডম্যান, কার্বারি এবং সার্কেল চিফদের ভাতা বাড়ানোর জন্য সরকার ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি বলেন, পার্বত্য এলাকায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের জন্য গত বছর প্রচুর অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। কিন্তু নানা সমস্যার কারণে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। তবে খুব শিগগিরই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে। এ ছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য বর্তমান সরকার পার্বত্য এলাকায় বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় রাস্তাঘাট নির্মাণ ও স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বিভিন্ন কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করেছে।
রাঙ্গামাটি জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে টেলিকনফারেন্সের সময় প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার, ইউএনডিপির কান্ট্রি ডিরেক্টর স্টিফেন প্রিসনারসহ পার্বত্য এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃৃতিক ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে শুরু হয়েছে ২ দিনব্যাপী হেডম্যান কর্মশালা। রাঙ্গামাটি হেডম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি চিংকিউ রোয়াজার সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নে বিশেষ বরাদ্দ, বিশেষ প্রকল্প এবং বিশেষ পরিকল্পনা নেবে। যারা পার্বত্য চুক্তির বিরোধিতা করে বলে এই চুক্তির কারণে দেশের অখ-তা নষ্ট হবে, তাদের বক্তব্য অসার। বর্তমান সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের ওপর বিশেষ নজর দিয়ে এলাকার উন্নয়নে বিশেষ বরাদ্দ, বিশেষ প্রকল্প এবং বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে।

কর্মশালায় অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার, চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়, জেলা প্রশাসক মোস্তফা কামাল প্রমুখ। কর্মশালায় পার্বত্য তিন জেলা থেকে ২৩০ জন হেডম্যান অংশ নিচ্ছেন।