সোমবার বেলা ১২ টার দিকে কক্সবাজারের রামু উপজেলার কিজারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জনসভাস্থলে বক্তব্য দেওয়ার সময় প্রধান্মন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাত ১১ টার দিকে রামুতে হামলার আগে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন সেখানকার উত্তেজিত মানুষকে শান্ত করার চেষ্টা করছিল। কিন্তু বিরোধী দল বিএনপির স্থানীয় সাংসদ লুত্ফুর রহমানের উস্কানিমূলক বক্তব্যে হাজার হাজার মানুষ লাঠিসোটা নিয়ে মন্দিরে আগুন দেয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বৌদ্ধবিহারে হামলার ঘটনায় তিনি মর্মাহত ও হতাশ। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এরকম জঘন্যতম ঘটনা ঘটেনি। আন্তর্জাতিকভাবে দেশের সম্মান ক্ষুণ্ন করতেই এই হামলা হয়েছে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, হামলার ঘটনায় যারা জড়িত তাঁদের কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না। জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেওয়া হবে।
জনসভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় শেখ হাসিনা জানান, পুড়ে যাওয়া ১২ টি বৌদ্ধবিহারের সংস্কার সরকারি অর্থে করা হবে । পুড়ে যাওয়া বৌদ্ধবিহারগুলোর সংস্কারের জন্য যা যা করা দরকার সরকারের পক্ষ থেকে তা করা হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভান্ডার থেকে এক কোটি ৩৪ লাখ আর বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে দুই কোটি ৪৮ লাখ নগদ টাকা (মোট তিন কোটি ৮২ লাখ ৪৬ হাজার টাকা ) ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া হবে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের গৃহনির্মাণের জন্য ৩০৭ বান টিন, ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের জন্য ৩৫.৬২ মেট্রিক টন চাল, ২৪৬ টি কম্বল , ১০৭ বান্ডিল কাপড়চোপড় ও স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের জন্য ২৯ সেট বই দেবে সরকার।
জনসভাস্থল থেকে পুড়ে যাওয়া বৌদ্ধবিহার ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বাড়িতে গিয়ে ত্রাণ দেন শেখ হাসিনা। এরপরে তিনি কক্সবাজারে যাবেন। সেখানে সরকারি ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তিনি বৈঠক করবেন।
উল্লেখ্য, বৌদ্ধধর্মাবলম্বী এক তরুণের ফেসবুকে পবিত্র কোরআন শরিফের অবমাননাকর ছবি ব্যবহার করা হয়েছে—এমন অভিযোগে শনিবার গভীর রাতে ওই হামলা চালানো হয়।
রামুর ঘটনার পর টেকনাফ, উখিয়া, পটিয়ায় বেশ কয়েকটি বৌদ্ধবিহার ও বাড়ি এবং একটি হিন্দু মন্দিরে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট চালায় দুষ্কৃতকারীরা।