সোমবার সকাল পৌনে ৯টায় কুর্মিটোলা বিমান ঘাঁটি থেকে বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ উড়োজাহাজে করে শেখ হাসিনা কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হন। সোয়া ১০টায় কক্সবাজারে পৌঁছানোর পর তিনি রওনা হন রামুর পথে।
বেলা ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রী পৌঁছান সীমা বৌদ্ধ বিহারে।
বিহারে পৌঁছানোর আগে রাস্তার দুই পাশের পোড়া বসতবাড়িগুলোও গাড়ি থেকে দেখেন শেখ হাসিনা।সীমা বিহারে পৌঁছানের পর বৌদ্ধ ভিক্ষুরা তাকে বিহার ও মন্দিরের বিভিন্ন অংশে হামলাকারীদের তাণ্ডবের চিহ্ন ঘুরে দেখান। শেখ হাসিনা বিহার ঘুরে দেখেন এবং কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন।
ফেইসবুকে কুরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে কক্সবাজারের যে বৌদ্ধ বিহারগুলো ধর্মীয় উগ্রপন্থীরা পুড়িয়ে দিয়েছে সেই মন্দিরগুলো ঘুরে দেখতে রামু সফর করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ সময় তিনি বৌদ্ধ ধর্মগুরুদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন এবং তাদের সান্তনা দেন।
সীমা বিহার থেকে প্রধানমন্ত্রী যান রাখাইন বৌদ্ধ মন্দিরে। বিহারের ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাগুলো ঘুরে দেখার পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি।
এই সফরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আছেন কমলাপুর ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারের মহাধ্যক্ষ শুদ্ধানন্দ মহাথের, স্থানীয় স রকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক ও প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক।
এছাড়া আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ ও আমীর হোসেন আমু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফ, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শরীফ নুরুল আম্বিয়া, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এনামুল হক, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ওয়াাজেদুল ইসলাম, গণ আজাদী লীগের সভাপতি হাজী আবদুস সামাদ, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক নুরুর রহমান সেলিম প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে আরো ছয়টি বৌদ্ধ মন্দিরের সঙ্গে এ বিহারটিও পুড়িয়ে দেয় হামলাকারীরা। হামলা, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের শিকার হয় ৩০টি বাড়ি ও দোকান।
হামলার রাতে লাল চিং, সাদা চিং, রামু মৈত্রী বিহার ও অপর্ণা মৈত্রী বিহার নামে চারটি মন্দিরে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় উগ্রপন্থীরা। প্রায় তিনশ বছরের পুরনো এসব বিহারের ধ্বংসস্তূপ ঘুরে দেখার সময় প্রধানমন্ত্রীকে এসব মনিএরর ঐতিহ্যের কথা জানান বৌদ্ধ ধর্মগুরুরা। এ সময় শেখ হাসিনা স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলেন এবং হামলার বিবরণ শোনেন।
ক্ষতিগ্রস্ত বিহার পরিদর্শন শেষে প্রধানমন্ত্রী রামু হাইস্কুল মাঠে স্থাপিত শান্তি সমাবেশ মঞ্চে উপন্থিত হন। বৌদ্ধ ভিক্ষু, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও সাংবাদিকরা এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন, ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ ও অনুদানের চেক বিতরণ করে বেলা ১টায় কক্সবাজারে ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। দুপুরে কক্সবাজার সার্কিট হাউজে জেলার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী। বিকাল ৪টার দিকে কক্সবাজার ত্যাগ করার কথা রয়েছে।