দল ও সরকারের সমালোচনা না করতে আওয়ামী লীগের কেন্ত্রীয় নেতা ও উপদেষ্টাদের বারণ করা হয়েছে। গতকাল দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের যৌথসভায় নেতাদের এমন নির্দেশনা দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

 বৈঠকে নেতাদের তোপের মুখে পড়েন অর্থ ও যোগাযোগ মন্ত্রী।
গতকাল বিকেল ৫টা থেকে গণভবনে টানা ৫ ঘণ্টার এ বৈঠকে দলীয় কর্মকাণ্ডে নিষ্কীয়তার কারণে সমালোচনা করা হয় দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামেরও। বৈঠকে দলের বেশ কয়েকজন নেতা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ও যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের কঠোর সমালোচনা করেন
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রীদেরকে আবারও হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেলে যেই হোক না কেনো ব্যবস্থা নেয়া হবে। বৈঠকে দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য কাজী আকরাম উদ্দীন আহমদ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে নিস্ক্রীয়তার অভিযোগ তুলে বলেন, বিএনপির মহাসচিব অসংখ্য মিথ্যে তথ্য দিয়ে প্রতিদিন একাধিকবার মিডিয়ার সামনে উপস্থিত হন। অথচ আমাদের সাধারণ সম্পাদককে দেখা যায় না।

বিএনপির মিথ্যাচারের জবাব দিতে সত্য নিয়ে দিনে একবার হলেও মিডিয়ার মুখোমুখি হওয়া উচিত। কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুর রহমান শেয়ারবাজারের অস্থিরতা নিয়ে সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীকে কম কথা বলার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, যেকোনো অবস্থায় পুঁজিবাজারে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি ছাড়াও একাধিক নেতা শেয়ারবাজার নিয়ে অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করেন।

জবাবে অর্থমন্ত্রী সকলকে আশ্বস্ত করে বলেন, বাজারকে অস্থিতিশীল করতে শেয়ারবাজারে একটি চক্র কাজ করছে। কিছুদিনের মধ্যে বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানান তিনি। যোগাযোগ ব্যবস্থার বেহাল দশা নিয়ে কার্যনির্বাহী সংসদের সিনিয়র সদস্য মোহাম্মদ নাসিমসহ বেশ কয়েকজন যোগাযোগমন্ত্রীর সমালোচনা করেন।

সমালোচনার মুখে আবুল হোসেন বলেন, বিগত জোট সরকারের দুর্নীতির কারণে দাতাগোষ্ঠীরা এখাতে আমাদের এখন টাকা ছাড় দিচ্ছেন না। নিজস্ব অর্থ থেকে কাজ করতে হচ্ছে। সেই কারণে প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ হচ্ছে না। ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলো যদি সম্পূর্ণ মেরামত করতে হয় তাহলে ৫ হাজার কোটি টাকা লাগবে। কিন্তু এখাতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১৪০০ কোটি টাকা। সূত্র জানায়, বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ দলীয় ফোরামের বাইরে নেতাদের কথা না বলার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি সরকারের অর্জনগুলো প্রচারের অনুরোধ জানান। এর আগে সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফও একই পরামর্শ দেন।