মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, দেশীয় ঐতিহ্য, শিল্প ও সংস্কৃতি এবং জাতীয় অর্জনগুলো আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তুলে ধরতে বিদেশে বাংলাদেশের পাঁচটি মিশনে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (কালচারাল উইং) খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাবের ভিত্তিতে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এ বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিভিন্ন দূতাবাসে বাংলাদেশি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র খুলতে আমরা কাজ করছি। চলতি বছরের মধ্যেই এটা সম্ভব হবে বলে আমরা আশা করছি।”
মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, প্রবাসী বাংলাদেশির সংখ্যা বেশি- এমন পাঁচটি দেশে বাংলাদেশ মিশনে এসব সাংস্কৃতিক শাখা খোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ভারতীয় দূতাবাসের ‘ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’ বা রাশিয়া দূতাবাসের ‘রুশ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের’ ধরণ অনুসরণ করা হতে পারে।
প্রাথমিকভাবে কেন্দ্র খোলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, যুক্তরাজ্যের লন্ডন, ফ্রান্সের প্যারিস, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই এবং ভারতের কোলকাতাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, “চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে এসব স্থান বা কেন্দ্রের সংখ্যা পরিবর্তনও হতে পারে।”
তিনি জানান, মিশনগুলোতে এসব সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের স্থায়ীত্ব ও অবকাঠামো কি হবে, জনবল কীভাবে আসবে, জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে কি কি শর্ত থাকবে এবং অর্থের যোগান কীভাবে আসবে- তা নির্ধারণে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতামত জানতে ফিরতি চিঠি দিয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জবাব পেলে জনবল কাঠামো অনুমোদনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হবে। তাদের অনুমোদনের পর অর্থ সংস্থানের অনুমোদন নিতে অর্থ বিভাগে প্রস্তাব যাবে। এ দুটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে ছাড় পেলে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র খুলতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানাবে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
সব প্রক্রিয়া শেষ করে চলতি বছরের মধ্যেই অন্তত পাঁচটি শাখা খোলা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি জানান, “পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব পাওয়ার পর যথাযথভাবেই কাজ চলছে।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনিও স¤প্রতি জাতীয় সংসদে বাংলাদেশি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র খোলার বিষয়টি জানান। বিদেশে বাংলাদেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও অর্জনগুলো তুলে ধরে বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি বাড়াতেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।