জনসংখ্যার বড় অংশই‘ডিজিটাল প্রযুক্তির বিভাজন’ বিবেচনায় সুবিধাবঞ্চিত হয়ে থাকলেও মোবাইল ফোনকে এ ব্যবধান কমিয়ে আনার সহজ বিকল্প মনে করছেন শিক্ষাবিদ ড. হেলেন বন্ড।
বি এন এন টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ওয়াশিংটনের হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটির এই গবেষক ‘পাঠদান ও শিক্ষা উন্নয়নে’ বিদ্যমানসুযোগ-সুবিধার উদ্ভাবনমূলক ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
ড. বন্ড বলেন, “মানবিক উন্নয়নে সামাজিক পরিবর্তনকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে প্রযুক্তিকে শিক্ষা ও উন্নয়নের একটি হাতিয়ার হিসেবে দেখি আমি।” উন্নয়নশীল বিশ্বের বিদ্যমান প্রযুক্তিকে ব্যবহার করা এবং তার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এই শিক্ষাবিদ।
উদাহরণ হিসেবে তিনি মোবাইল ফোন প্রযুক্তির কথা বলেন। মোবাইল ফোনের মতো একটি ‘উন্মুক্ত মাধ্যম’ ও সহজ প্রযুক্তি ব্যবহার করে কীভাবে ‘পাঠদান ও শেখা’ যায় সে বিষয়টি এ সম্মেলনের একটি কর্মশালায় তুলে ধরতে চান তিনি।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে জনসংখ্যার মাত্র ‘চার শতাংশ’ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হলেও এখানে প্রায় ১০ কোটি মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন। ড. বন্ড বলেন, বড় পরিসরে যোগাযোগ আওতা প্রতিষ্ঠার অন্যতম চাবিকাঠি হয়ে উঠতেপারে মোবাইল ফোন।
পাঠদানবিজ্ঞান ও যৌথ-শিক্ষাকার্যক্রমের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের এই বিশেষজ্ঞ একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
শিক্ষা গবেষণায় স্বনামধন্য যুক্তরাষ্ট্রের এই বিদূষী বর্তমানে হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। শিক্ষাক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার থেকে শুরু করে রাজনৈতিক পরিবর্তনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাবও তার আগ্রহের বিষয়।
বি এন এন টোয়েন্টিফোর ডটকম এবং ইউনিসেফের অংশীদারিত্বে ‘শিশুদের সংবাদ সেবা’ চালুর সা¤প্রতিক উদ্যোগেরও প্রশংসা করেন ড. বন্ড। তিনি বলেন, শিশুদের কণ্ঠ যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয় না। তাদের কথা শোনা হয় না।
শিশুরা কীভাবে চিন্তাকরে, তারা কেমন বোধ করে এবং কী বিশ্বাস করে তা যথাযথভাবে মূল্যায়িত হয় না। হেলেন বন্ড বলেন, “আমি মনে করি এটা (শিশুদের নিউজ সার্ভিস) শিশু অধিকার সনদের সঙ্গে খুবই সাজুয্যপূর্ণ।”
সমাজে শিশুদের যথাযথ প্রতিনিধিত্বের প্রতি সবাইকে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে এ প্রসঙ্গেসিয়েরা লিওনের সা¤প্রতিকদৃষ্টান্ত তুলে ধরেন তিনি। তিনি বলেন, “দশ বছর ধরে একটা যুদ্ধের মধ্য পার হওয়া সিয়েরা লিওনে একটা ‘সত্য ও সংহতি পরিষদ’ গঠিতহয়েছে।
ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সেখানে তারা শুধুমাত্র শিশুদের জন্য একটা ‘সত্য ও সংহতি প্রতিবেদন’ তৈরি করেছে, এটা শিশুদের জন্যই লেখা হয়েছে এবং এতে শিশুদের ভাবনা স্থান পেয়েছে।”
হাওয়ার্ড ইউভার্সিটির ‘ইন্সপিরেশনাল ইন্টারডিসিপ্লিনারি অ্যাওয়ার্ড’ এবং ভারতের ‘ফুলব্রাইট-নেহেরু ফেলোশিপ’ ছাড়াও অনেক সম্মাননায় ভূষিত এই শিক্ষাবিদ ২০ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ আয়োজিত ‘টিচিং এন্ড লার্নিং ইংলিশ থ্রো টেকনোলজি’ শিরোনামে এ আন্তর্জাতিক সম্মেলনে একটি মূল-প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন।