ফিলিস্তিনের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাতের মৃত্যু ঘিরে নতুন প্রশ্ন ওঠায় তার লাশ কবর থেকে তুলে পরীক্ষা করা হতে পারে। আলজাজিরা টেলিভিশন চ্যানেল ৯ মাস ধরে বিশেষ তদন্ত চালানোর পর গত মঙ্গলবার জানিয়েছিল, আরাফাতকে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল বলে সন্দেহ করার কারণ আছে।
এই বিষ অতিরিক্ত তেজস্ক্রিয় পদার্থ বলেও সন্দেহ করা হচ্ছে। এই খবর ফিলিস্তিনে আলোড়ন তুলেছে। প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসও সমাধিক্ষেত্র থেকে দেহ তুলে ফরেনসিক তদন্ত করার অনুমতি দিয়েছেন। এই দাবিতে একমত পোষণ করেছেন আরাফাতের স্ত্রী সুহাও। ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল-মালিকি বৃহস্পতিবার বলেছেন, এমন তদন্তই হওয়া উচিত। এই দাবিকে সমর্থন করেছে তিউনিসিয়া। তিউনিসিয়ার সরকার সাবেক ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাতের মৃত্যু রহস্য নিয়ে আলোচনার জন্য আরব লিগকে জরুরি বৈঠকে বসার আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে দেশটি ওই ঘটনার তদন্তের জন্য আন্তর্জাতিক কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে। ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল-মালিকি ফিলিস্তিনি রেডিওকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে বলেছেন, ওই আহ্বানে সাড়া দিয়ে আরব লিগের জরুরি বৈঠক ডাকা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইয়াসির আরাফাতের মৃত্যু সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে মানুষ অপেক্ষা করছে। ইয়াসির আরাফাতকে তেজস্ক্রিয় পদার্থ প্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে বলে সুইজারল্যান্ডের একটি প্রতিষ্ঠান দাবি করার পর তিউনিসিয়া এ আহ্বান জানাল। সুইজারল্যান্ডের লাওসেনের ইনস্টিটিউট ডি রেডিওফিজিস্ক জানিয়েছে, পোলোনিয়াম নামের একটা বিরল এবং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তেজস্ক্রিয় পদার্থ প্রয়োগে আরাফাতকে হত্যা করা হয়েছে। ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফ্রাঁসোয়া বোচুড জানিয়েছেন, ইয়াসির আরাফাতের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র পরীক্ষা করে তাতে জৈবিক তরল পদার্থের উপস্থিতির পাশাপাশি উচ্চমাত্রার পোলোনিয়াম-২১০ পাওয়া গেছে। তিনি আরও বলেন, প্যারিসের হাসপাতালে মারা যাওয়ার আগে এসব জিনিস ইয়াসির আরাফাত ব্যবহার করেছেন। আরাফাতের স্ত্রী সুহা আরাফাত এসব তাদের দিয়েছেন। ফ্রাঁসোয়া বোচুড জানান, সুহা যদি তার স্বামীর মৃত্যুর সত্যিকার কারণ জানতে চান তাহলে আরাফাতের দেহাবশেষ পরীক্ষার অনুমতি দিতে হবে এবং এতে অতিমাত্রায় পোলোনিয়াম পাওয়া গেলে প্রমাণিত হবে তাকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে। প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন বা পিএলওর নেতা ইয়াসির আরাফাত কয়েক সপ্তাহ চিকিত্সার পর ২০০৪ সালের নভেম্বরে প্যারিসের একটি হাসপাতালে মারা যান। ব্যক্তিগত তথ্য গোপন রাখা সংক্রান্ত আইনের দোহাই দিয়ে সে সময় ফরাসি কর্তৃপক্ষ তার মৃত্যুর কারণ জানাতে অস্বীকার করে।