রোড মার্চ কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের কারণে জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন খালেদা জিয়া। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন চারদল ও সমমনা বিভিন্ন সংগঠনসহ জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক শক্তিসমূহের আয়োজনে ঢাকা থেকে সিলেট অভিমুখী রোড মার্চ কর্মসূচিকে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে অভূতপূর্ব ও বিপুলভাবে সফল করায় এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।

রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে পবিত্র নগরী সিলেট পর্যন্ত দীর্ঘ যাত্রাপথে জনগণের যে জাগরণ ও প্রবল জনজোয়ার দেখেছি, তাতে আমি অভিভূত। এই বিপুল ভালবাসা আমাকে আরও একবার কৃতজ্ঞতার বন্ধনে আবদ্ধ করলো। কৃতজ্ঞতার এই ঋণ আমি জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে শোধ করার চেষ্টা করবো। খালেদা জিয়া বলেন, এই বিপুল জনজাগরণ প্রমাণ করছে- বর্তমান ব্যর্থ, অত্যাচারী ও দুর্বিনীত শাসকদের বিন্দুমাত্র জনসমর্থন নেই। তাদের কোন গণভিত্তি নেই। তাদের পায়ের তলার মাটি সরে গেছে।

প্রমাণ হয়েছে, গণবিরোধী এই সরকারের এক মুহূর্তও ক্ষমতায় থাকার আর কোন অধিকার নেই। বিরোধীদলীয় নেতা আরও বলেন, আমি আমার জনগণকে যতটুকু চিনতে ও বুঝতে পারি, তাদের হৃদস্পন্দন ও মনের ভাষা যতটুকু পড়তে পারি, তাতে আমার মধ্যে এই দৃঢ়বিশ্বাস প্রবল হয়েছে। ব্যর্থ শাসকরা যতই মিথ্যাচার, ষড়যন্ত্র ও নিপীড়ন করুক না কেন, আগামী দিনগুলো হবে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক শক্তিরই।

আমি জনতার কণ্ঠে বিজয়ের তূর্যনিনাদ শুনতে পাচ্ছি। খালেদা জিয়া সরকারের উদ্দেশে বলেন, জনগণের অভিপ্রায় অনুধাবনের আহ্বান জানাচ্ছি। আমি আশা করি, তারা ভুল ও বিপর্যয়ের পথে ছেড়ে সমঝোতার পথে ফিরে আসবেন। শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পন্থায় সরকার বদলের যে পথ তারা রুদ্ধ করেছেন, জনগণের দাবি অনুযায়ী সেই পথ তারা খুলে দেবেন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের বাধা অপসারণ করে যত দ্রুত সম্ভব পদত্যাগের করবেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ঢাকা-সিলেট রোড মার্চ সফল করায় বিএনপিসহ চারদল, সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন, সমমনা দলসমূহ এবং বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও অনেক কষ্ট করে জনগণের বিপুল জাগরণের সংবাদ দেশবাসী ও সারা দুনিয়ার মানুষের সামনে তুলে ধরায় গণমাধ্যমকর্মীদের এবং সরকারের বৈরী আচরণ সত্ত্বেও শান্তি বজায় রাখায় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। খালেদা জিয়া বলেন, জনজাগরণের এই বিপুল উচ্ছ্বাসের কারণে অনেকেরই কষ্ট হয়েছে এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ছন্দপতন ঘটেছে, সে কথা আমি জানি। এর জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।

তবে আমি এ কথাও জানি, বাংলাদেশের সচেতন মানুষ বৃহত্তর কল্যাণের স্বার্থে ব্যক্তিগত ক্ষয়ক্ষতি মেনে নিতে এবং ত্যাগ স্বীকার করতে কখনোই পিছপা হন না। আমাদের আগামী দিনের কর্মসূচিগুলোকেও একইভাবে সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য আমি দল-মত নির্বিশেষে সব দেশপ্রেমিক নাগরিক, বিশেষ করে যুবসমাজের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। সত্য ও ন্যায়ের বিজয় অবশ্যম্ভাবী।

এদিকে আলাদা এক বার্তায় দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও রোড মার্চের সংশ্লিষ্ট জেলার বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী ও জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।