পদ্মা সেতুর দুর্নীতি আড়াল করে সরকার জনগণের সঙ্গে ‘প্রতারণা’ করছে বলে অভিযোগ করেছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। শুক্রবার বিকালে এক আলোচনা সভায় দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “সরকার বলছে, যেখানে অর্থায়নই হয়নি, সেখানে দুর্নীতি হলো কোথায়। এ কথা থেকে বোঝা যায়, তারা গোটা দেশের মানুষকে বোকা মনে করে। কানাডীয় যে কোম্পানিকে পরামর্শক নিয়োগ করতে বলা হয়েছিল, সেই কোম্পানির প্রধান নির্বাহী বলেছেন, কাজ পাইয়ে দিতে টাকা লেনদেন হয়েছে।”

পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের দেয়া চিঠি প্রকাশের দাবি আবারও জানিয়ে তিনি বলেন, “ওই দুর্নীতির সঙ্গে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী, যোগাযোগ সচিব, প্রকল্প পরিচালক ও আরও দুই জন্য ব্যক্তি জড়িত বলে চিঠিতে বলা হয়েছে। এই তথ্যগুলো ভুলও হতে পারে। আপনারা চিঠিটি প্রকাশ করুন। এভাবে মিথ্যাচার করে জনগনকে বোকা বানানো যাবে না।”

দুর্নীতির বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়ার দাবি করে গত ২৯ জুন ২৯০ কোটি ডলারের পদ্মা সেতু প্রকল্পে ১২০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দেয় বিশ্ব ব্যাংক।

এর মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু তৈরি করা হবে। গত ৮ জুলাই সংসদে দেওয়া বক্তব্যে অর্থায়নের রূপরেখাও ঘোষণা করেন তিনি। গত ৯ জুলাই এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদে একটি সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়।

প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থার জন্য সরকারের দলীয়করণকে দায়ী করে ফখরুল বলেন, “দলীয় ব্যক্তিদের নিয়োগের মাধ্যমে সরকার দেশের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার পরিবেশকে বিনষ্ট করে দিয়েছে।”

বর্তমান সরকারকে হটানো ছাড়া এ পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলনে নামতে হবে। সরকারকে বলছি, নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা মেনে নিন, আমরা আন্দোলন করবো না। কিন্তু সরকার কোনো কথাই শুনবে না। তাই আমাদের সামনে আর কোনো পথ নেই।’’ শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে পিপলস লিগের ৩৬ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

পিপলস লীগের সভাপতি গরীব নেওয়াজের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে পিপলস লীগের মহাসচিব সৈয়দ মাহবুব হোসেন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নিলু, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির সভাপতি খন্দকার গোলাম মূর্তজা, ইসলামিক পার্টির সভাপতি আবদুল মবিন, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, ন্যাপ -এর মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনি প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।