বুয়েটের অচলাবস্থা নিরসনে দুই প্রতিপক্ষকে বাদ দিয়ে কয়েকজন সাবেক উপাচার্য, ডিন ও বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে দুপুরে বৈঠকে বসছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। বেলা ১২টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এই বৈঠকে বুয়েটের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষককেও ডাকা হয়েছে। তবে উপাচার্য এ এম নজরুল ইসলাম বা আন্দোলনরত শিক্ষকদের এতে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

শিক্ষামন্ত্রী রোববার বুয়েট পরিস্থিতি নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান এ কে আজাদ চৌধুরী, শিক্ষা সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে তিনি সোমবার এই বৈঠকের কথা জানান।

নূরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, “বৈঠকে বুয়েট শিক্ষক সমিতি ছাড়া জ্যেষ্ঠ সব শিক্ষককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। শিক্ষক সমিতি ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, তারা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ছাড়া আর কারো সঙ্গে বৈঠক করবে না। সম্মানিত শিক্ষকরা যাতে বিব্রত না হন, সেজন্য তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।”

আমন্ত্রিত জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক উপাচার্য আব্দুল মতিন পাটোয়ারি, এমএইচ খান, জামিলুর রেজা চৌধুরী, আইনুন নিশাত, মীর মোবাশ্বের আলী, আবুল কাশেম এবং রাজউকের চেয়ারম্যান ও ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সভাপতি নূরুল হুদা। উপাচার্য ও উপউপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে গত বুধবার একযোগে পদত্যাগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পদে থাকা ২৪ শিক্ষক।

পদত্যাগের পরও তাদের বৈঠকে আমন্ত্রণ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “এ ধরনের পদত্যাগকে পদত্যাগ হিসেবে ধরা হয় না। পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা বা না করার বিষয়ও রয়েছে। আর এ বৈঠকে তাদের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবেই ডাকা হয়েছে।” বুয়েটের শিক্ষকদের দাবি মেনে নেওয়ার ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের আশ্বাসের পরও আন্দোলনের কারণে দুঃখ প্রকাশ করেন নাহিদ।

তিনি বলেন, “তাদের দাবি অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগসহ বিভিন্ন অনিয়মের তদন্তের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির দেওয়া প্রতিবেদন পড়তে বলা হলেও না পড়েই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। শিক্ষকদের এ ধরনের আন্দোলনে আমরা দুঃখিত, মর্মাহত ও উদ্বিগ্ন।”

উপাচার্য ও উপউপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে গত এক সপ্তাহ থেকেই আন্দোলন চালিয়ে আসছে বুয়েটের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। রোববার তারা আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে কর্তৃপক্ষ গত মঙ্গলবার হঠাৎ করে রোজা ও ঈদের ছুটি এগিয়ে আনলে বুধবার থেকে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বুয়েট ক্যা¤পাস।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ওইদিন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এক প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে লাগাতার অবস্থান ধর্মঘট শুরুর ঘোষণা দেন।