রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি হলে মধ্যরাতে ছাত্রলীগ কর্মীদের সংঘর্ষের পর ভোর পর্যন্ত নিষ্ফল তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সোহেল রানাকে রাতেই ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ এবং সোহরাওয়ার্দী হলের দুই দল ছাত্রলীগ কর্মী রোববার রাত ১২টার দিকে সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় গুলির পাশাপাশি বেশ কয়েকটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয় বলে শিক্ষার্থীরা জানায়। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ সোহেল রানাকে প্রথমে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং সেখান থেকে রাতেই ঢাকায় পাঠানো হয়।
মতিহার থানার ওসি আনিসুর রহমান বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাক ১টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। “ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার জন্য মাদার বখশ ও সোহরাওয়ার্দী হলে রাত আড়াইটা থেকে ভোর পর্যন্ত তল্লাশি চালানো হয়েছে। তবে কোন অস্ত্র উদ্ধার বা কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি”, বলেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, “পরিস্থিতি থমথমে। দুই হল এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।” এদিকে গুলিবিদ্ধ সোহেল রানার সঙ্গে থাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জহিরুল হক জাকির বলেন, “আমরা সকালে ঢাকায় পৌঁছেছি। সোহেল রানাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।”
গত ২৬ জুন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার সমর্থক সংগঠন ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠনের পর থেকেই উত্তেজনা চলছিল। এর জের ধরেই বিবদমান দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধেছে বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে।
দুই হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানায়, ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আবু হুসাইন বিপু সমর্থক সহসভাপতি আখেরুজ্জামান তাকিমের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আহমেদ আলী সমর্থক সাংগঠনিক সম্পাদক তৌহিদ আল তুহিনের কথা কাটাকাটি থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত।
এর জের ধরে তাকিমের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ জন ছাত্রলীগকর্মী এবং তুহিনের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জন ছাত্রলীগকর্মী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মাদারবখশ ও সোহরওয়ার্দী হলের সামনে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের সময় কয়েকটি হাতবোমার বিস্ফোরণ এবং ১৫-২০ রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা যায় বলে শিক্ষার্থীরা জানায়।
সাংগঠনিক সম্পাদক তুহিন বলেন, “সভাপতি আহমেদ আলীকে নিয়ে অশ্লীল গালিগালাজ করায় তাকিমের সঙ্গে আমার বাগবিতণ্ডা হয়। কিছুক্ষণ পর সে মাদারবখশ হলের সভাপতির কক্ষে (২৩৮ নং কক্ষ) ইট-পাথর ছুড়তে থাকে। আমরা এর প্রতিবাদ করলে সে (তাকিম) তার দলবল নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে এবং পিস্তল দিয়ে গুলি ছোড়ে।”
তবে সাধারণ সম্পাদক বিপুর অনুসারী ছাত্রলীগ নেতারা দাবি করেছেন, তুহিনরাই গুলি ছুড়েছে এবং তাতে শেরে বাংলা হল ছাত্রলীগের নেতা সোহেল গুলিবিদ্ধ হয়েছে।